লিখেছেন : মনোবর
ও বেটা পাক খাচ্ছে খাক। ওর কথায় কানই দেবোনা। এ জগতের কিছুই জানিনা। তবে সবে মাত্র এলাম ধীরে ধীরে সবই জানা যাবে। এখানে তো কাউকেই দেখছিনা। ও কি এই কলেজে পড়ত নাকি অন্য কলেজে পড়ত সেটাও ভাল করে মনে পড়ছে না। মরতে না মরতেই হুড় হুড় করে সব ভুলতে শুরু করেছি। তার চেয়ে ওদের বাড়ীথেকে একবার ঢুঁ মেরে এলেই হয়। একটু লজ্জা লজ্জা করছে। লোকে শুনলে কি বলবে? সবে তো মরলাম! এত তাড়াতাড়ি নিজের বাড়ীর কথা ভুলে অন্যের পেছনে ঘুর ঘুর করা কি পুরুষোচিত কাজ!
ও বেটা পাক খাচ্ছে খাক। ওর কথায় কানই দেবোনা। এ জগতের কিছুই জানিনা। তবে সবে মাত্র এলাম ধীরে ধীরে সবই জানা যাবে। এখানে তো কাউকেই দেখছিনা। ও কি এই কলেজে পড়ত নাকি অন্য কলেজে পড়ত সেটাও ভাল করে মনে পড়ছে না। মরতে না মরতেই হুড় হুড় করে সব ভুলতে শুরু করেছি। তার চেয়ে ওদের বাড়ীথেকে একবার ঢুঁ মেরে এলেই হয়। একটু লজ্জা লজ্জা করছে। লোকে শুনলে কি বলবে? সবে তো মরলাম! এত তাড়াতাড়ি নিজের বাড়ীর কথা ভুলে অন্যের পেছনে ঘুর ঘুর করা কি পুরুষোচিত কাজ!
ছ’খানা করে লুচি, আলুরদম, মিষ্টি এই সবার
প্রথম পাতে দেওয়া হচ্ছে। বড় জামাই বাবু সব দেখাশুনো করছে। ওর আবার কর্তাগিরির বাই
খুব বেশী। কেষ্ট খেল আঠারটা লুচি আর পনেরটা রসগোল্লা। এইজন্য গীতায় বলেছে কর্ম সবই
শুভাশুভ ঘাঁটা। আমার মরা আর কেষ্টর দান পড়া। সবাই কি টানতে পারে! মাতাল গুলো না
খেয়ে সব নয়-ছয় করছে। খাবার গুলো চেয়ে দেখতে ভালই লাগছে তবে ক্ষুধা বলে কোন অনুভূতি
আমার অন্তঃত হচ্ছে না। তা ছাড়া নিজের দাহকার্যে এসে নিজেই পেটপুরে খাওয়াও আবার
শাস্ত্রসম্মত নয়। শ্রাদ্ধের সময় আমায় নানারকম জিনিষ দেবে তখন ঐ ভূতগুলোকেও সঙ্গে
নিয়ে যেতে হবে। দূর কচুপোড়া! তোরা খেয়ে উচ্ছন্নে যা আমি যাই পলির বাড়ী থেকে একপাক
মেরে আসি। ভাবা মাত্রই পলির বাড়ী পৌঁছে গেলুম। কি স্পীড মাইরি! ভাবা যায়না।
কেন যে এলুম! কোন শালা এর মধ্যেই খবর
পৌঁছে দিয়েছে। দুটো খবরই এসে গেছে। ৫২% শতাংশ নাম্বার পেয়ে অনার্স সহ উত্তীর্ণ
হয়েছে পলি। লাইনটা ভাল জায়গাতেই করেছিলুম। কিন্তু সবই কপাল! ওপারে থাকলে আবার
এপারটা দেখা হয় না। একটা মানুষ একসঙ্গে কটা দিকে যেতে পারে। তা আজ এই আনন্দের দিনে
উপুড় হয়ে শুয়ে পলি এখন হেঁচকি তুলে কাঁদছে। পাশ ফিরতে দেখা গেল নাকের জলে চোখের
জলে মুখের আকার প্রকার বদলান সত্বেও পলি ইজ পলি। ওর মুখের গেট আপটাই আলাদা। ঘরের
মধ্যে অর্থহীন ঘুরপাক খাচ্ছি কিন্তু কোন কাজের কাজ করতে পারছি না। ও আমার উপস্থিতি
বুঝতেই পারছে না। ওদিকে বাইরে গম্ভীর আলোচনা চলছে। একেই বলে মেয়ে! অতভাল নাম্বার
পেয়েও কাঁদছে। কিন্তু এতো বড় মুষ্কিলে পড়েছি। আমি যে দিব্যি আছি সেটা এখন বোঝান
যাবে কি করে!
যাই সবুজ পন্ডিতের কাছ থেকে যদি এ
ব্যাপারে কোন আইডিয়া পাওয়া যায়। যেইনা ভাবা অমনি সবুজের কথা শুনতে পেলাম। ‘ধর ও
বুঝল। তারপর কি হবে?’
আমিঃ কি হবে মানে? দুঃখটা তো যাবে।
সবুজঃ কিন্তু তুমি তো আর ওর কোন কাজে লাগবে না। তোমার
অস্তিত্ব কই?
আমিঃ
এইতো আমি। যেমন কে তেমন। খালি ফালতু শরীরটা খসে গেছে।
সবুজঃ
তোমাকে দেখা যায়না, তোমার কথা ওরা শুনতে পায় না, তোমাকে স্পর্শ করা যায় না।
এমন তুমি কে নিয়ে পলি কি করবে?
আমিঃ
তার মানে?
সবুজঃ এসো, এখানে এসো। সব বুঝিয়ে বলছি।
আমিঃ
যেতে পারি এক শর্তে।
সবুজঃ
কি তোমার শর্ত?
আমিঃ কি করলে ও বুঝতে পারবে আমি আছি সেই কায়দাটা
শিখিয়ে দিন। আমি জানি ভূতেরা এসব পারে।
সবুজঃ
তাতে তোমার দুঃখ বাড়বে। কোন লাভ হবে না।
আমিঃ
কিচ্ছু শুনতে চাইনা। ও জানুক আমি আছি।
সবুজঃ
একমনে ভাবো যে তুমি ওর মধ্যে ঢুকে যাচ্ছো। তারপর দেখবে ওর কন্ঠ ব্যবহার করে
তুমি কথা বলতে পারবে। তোমার নিজের আগেকার স্বর স্মরণ করে কথা বল তাহলে তোমার
কন্ঠস্বর তোমার মতই হবে।
আমি ঠিক তাই করলাম। আর হঠাৎ পলি চমকে উঠে
উদভ্রান্তের মত ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে গেল। ( ক্রমশঃ)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন