লিখেছেন : ডঃ মানালি ভট্টাচার্য । প্রসেনজিৎ
দাশগুপ্ত
জন্ম এবং
জন্মরহস্য নিয়ে মানুষের কৌতুহল বহুদিনের ।
পুরান , উপনিষৎ এবং
পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মীয় লোকাচারে বর্নিত ও
কথিত বিভিন্ন মানব , মহামানব এবং
অতিমানবের (Super Human) জন্ম ও জন্ম সংক্রান্ত নানান রহস্য ও অলৌকিক ঘটনা
বহুযুগধরে মানব সমাজ ও সভ্যতাকে আলোঢ়িত করেছে
, অনুপ্রানিত
করেছে । বিভিন্ন জন্মরহস্যের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা কিংবদন্তি (myth) মানুষের মনে
জাগিয়েছে শ্রদ্ধা , সম্ভ্রম ও ঐকীবদ্ধকরনের অদৃশ্য মায়াজাল । পৃথিবীর
প্রায় সকল ধর্মের ধর্মীয় ইতিহাস ঘাটলে এর
প্রমান বহুল পরিমানে পাওয়া সম্ভব । তা সে আদম – ইভ বা খৃষ্ঠের জন্মবৃত্তান্তই হোক বা গ্রীক পুরানের হারকিউলিসের
জন্ম , মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণ বা ভীস্মের জন্মরহস্য – সবই কেমন যেন এক অদ্ভুত সুত্রে বাধা।
একটু লক্ষ্য
করলে দেখা যাবে , যে যাদের নিয়ে বা যাদের জন্মসূত্র নিয়ে এত আলোচনা , তারা কিন্তু কেউই সাধারন মানুষ ছিলেন না । এরা প্র্যত্যেকেই এক কথায় “সুপার হিউম্যান” (Super Human) ।অদ্ভুত তাদের
জীবনদর্শন , অদ্ভুত তাদের
কর্মকান্ড এবং ততটাই অদ্ভুত ও রহস্যাবৃত
তাদের জন্ম যা তাদের বাকিসবার থেকে আলাদা ও স্বতন্ত্র করে চিহ্নিত করে দেয় । বিজ্ঞান এই সব ‘
অলৌকিক ‘ জন্মরহস্যের
নিজের মতন করে প্রচলিত
বৈজ্ঞানিক মতবাদ স্মৃষ্টি করলেও , মানবসমাজ
কিন্তু লোকাচার ও লোকসমাজ
দর্শনের ‘গালগপ্পো’-কেই বেশি পছন্দ ও গুরুত্ব দিয়ে থাকে ।
অবশ্য জন্মরহস্য
নিয়ে এই ‘গালগপ্পো ‘ – কেও শুধুমাত্র অতিকথনের আঙ্গিকে গ্রহন করা মূর্খামি । আজও এইসব কিংবদন্তীকে
বিশ্লেষন করলে আমরা পেতে পারি প্রাচীন বা পুরাকালে সংগঠিত বিজ্ঞান বা বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার
অভাবনীয় উন্নতির ইতিহাস । যদি ‘ জন্ম ‘ বা ‘ জন্মসূত্র ‘ ধরেই আলোচনা এগোয় তবে সেদিক থেকেও পাওয়া যেতে পারে চমকপ্রদ সব তথ্য ।
তেমনই জন্মকেন্দ্রিক এক বিস্ময়কর
পর্যায় হল – প্রাচিন যুগের
‘ নলজাতক ‘ বা ” টেস্ট টিউব
বেবি ” (Test-tube Baby) ও তাদের
মাহাত্ম্যগাঁথা । জন্মবৃত্তান্ত বা জন্মরহস্যের কুয়াশাছন্ন , রহস্যাবৃত ইতিহাস ঘুরে ঘুরে দেখে নেয়া যাক একটু ভিন্ন স্বাদের ছোঁয়া । লোকাচার , মিথ ও বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারনার এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন যা এই বিংশ শতাব্দির অন্যতম
বৈজ্ঞানিক-বিস্ময় ‘ টেস্ট-টিউব বেবি ’র বিষয় ও
বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারনাকে নতুন ভাবে দেখতে সাহায্য করবে । একই সাথে আরো একবার প্রমানিত হবে প্রাচিন আর্য
সভ্যতার বিজ্ঞানমন্স্কতা ও তার আধুনিকীকরনের
মাহাত্ম্য ।
আমরা জানি , ‘ টেস্ট টিউব বেবি ’ বা ” নলজাতক ” আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারি
অধ্যায় যেখানে মাতৃজঠরের
সাহায্য ছাড়াই সম্পূর্ণ কৃত্রিম উপায়ে ভ্রূণ থেকে পরিপুর্ন শিশু ভুমিষ্ট হয় , অথচ হাজার বছর আগে ঋকবৈদিক আর্য সভ্যতাতেই
এর প্রথম সফল পদক্ষেপ
পরিলক্ষিত হয়ে থাকে ।
আধুনিক যুগে , ‘ নলজাতক ‘ তারাই যাদের ভ্রূণ সৃষ্টি করা হয়েছে কৃত্রিম উপায়ে
মাতৃ জঠরের বাইরে । সেই ভ্রূণ (Featus) প্রতিস্থাপন
করা হয়েছে জরায়ুতে । সেখানে ২৭০ বা ২৮০ দিন সেই ভ্রূণ স্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে
পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপান্তরিত হয়ে ভূমিষ্ঠ হয় ।
যেহেতু এই ভ্রূণ সৃষ্টি করা হয় ” টেস্ট টিউব ” বা ইনকিউবেটরে (Incubetor) তাই এই ভ্রূণ
থেকে জাত শিশুদের ” টেস্ট-টিউব বেবি ” বলে সম্বোধন করা হয়ে থাকে । সুতরাং , বর্তমান ‘ নলজাতক ‘ -দের ভ্রূণ সৃষ্টিটাই কেবল টিউব বা দ্রোনি (বিশেষ পাত্র) তে হচ্ছে , বাকি বিবর্তন
ঘটছে জরায়ুতে
স্বাভাবিক শিশুদের মতনই । পুরোপুরি নলজাতক অর্থাৎ একটা ভ্রূণ সৃষ্টি থেকে একটা পূর্ণাঙ্গ শিশুর জন্মাবার
সম্পূর্ণ বিবর্তনই কোনো কৃত্রিম পরিবেশ (Artificial
Atmosphere) বা কৃত্রিম জরায়ূতে সম্পন্ন করার ব্যাপারটা আজও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা
কিন্তু রপ্ত করে উঠতে পারেননি , যদিও প্রাচিন
ইতিহাসের পাতা ঘাটলে কিন্তু এই ধারনার ভ্রান্তি ধরা পড়ে ।
৬০এর দশক
থেকেই অস্ট্রেলিয়া , ইউরোপ ও আমেরিকায় নলজাতক বা ‘ টেস্ট-টিউব বেবি ‘ -দের নিয়ে গবেষনা
শুরু হয়েছিল , যদিও হাজার
বছর আগে মহাভারতের যুগে এর
সার্থক প্রচলন শুরু হয়ে গেছিল বলেই পন্ডিত ও
বিদ্বজনের ধারনা । সে আলোচনায় যাবার আগে জেনে নেয়া যাক , ১৯৭৮ সালে পৃথিবীর প্রথম স্বীকৃত নলজাতক
লুইজি ব্রাউন – নামের কন্যাটি অস্ত্রেলিয়াতে ভূমিষ্ঠ হয় । ‘ স্বীকৃত ‘ এই অর্থে যে লুইজির জন্মের কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের এই শহর কলকাতায়
ডঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় – এর সার্থক টেস্ট-টিউব বেবি ” দুর্গা ” জন্ম নিয়ে ছিল । দুর্গা কিন্তু পৃথিবীর দ্বিতীয় নলজাতকের সম্মান পায়নি । কারন ডঃ
মুখোপাধ্যায় গোটা ব্যাপারটাই নিজেদের মধ্যে
সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন যা নিয়ে পরবর্তীকালে নানান সংশয়ের বাতাবরন গড়ে ওঠে ও ‘ দুর্গা ‘ সেই স্বীকৃতি
লাভে বঞ্চিত হওয়ায় ডঃ মুখোপাধ্যায়
ক্ষোভে – দুঃখে – হতাশায় আত্মঘাতী হন । পরে তারই বন্ধু ও সহকর্মী ডঃ বৈদ্যনাথ চক্রবর্ত্তী ১৯ শে
নভেম্বর , ১৯৮৬ তে
কলকাতায় ভারতের প্রথম টেস্ট-টিউব পুত্র সন্তানের জন্ম দেন । যদিও তার
আগেই ৬ই অগস্ট , ১৯৮৬ তে মুম্বাই - এর কিং
এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হসপিটাল (King Edward Memorial Hospital) – এ বিকেল ৩ টে
৪৫ মিঃ এ ভারতের প্রথম ‘ স্বীকৃত ‘ টেস্ট-টিউব বেবি (কন্যা সন্তান) জন্ম নেয় । এর পর গোটা পৃথিবী জুড়েই নলজাতকদের ভূমিষ্ঠ হবার ইতিহাস । বেশ কয়েক বছর ধরে উন্নত
দেশগুলিতে এমন কি ভারতের
মতন উন্নয়নশীল দেশেও নলজাতকেরা বেশ ভাল সংখ্যায় জন্ম নিয়েছে । সে আরেক ইতিহাস !
এই সূত্রে , খুব ছোট করে বলে নেয়া যাক টেস্ট-টিউব বেবি (Test-tube Baby) সৃষ্টির প্রক্রিয়া ।
অনিবার্য কারনে কোন মায়ের মাতৃ
জঠরের ফ্যালোপিয়ান নল (Fallopian Tube) অকেজো হয়ে পড়লে তিনি বন্ধ্যাত্বে পর্যবসিত হন এবং স্বাভাবিক
ভাবে সন্তান ধারনে অক্ষম হয়ে পড়েন ।
তখন
চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি বিশেষ অত্যাধুনিক
পদ্ধতি IVF-ET (In-vitro fertilization and embryo
transfer) অর্থাৎ গবেষনাগারে প্রাণসৃষ্টি এবং ভ্রূণ সংস্থাপন করে
কৃত্রিম উপায়ে তাকে মাতৃত্ব
দেয়ার চেষ্টা করা হয় । অর্থাৎ স্ত্রী ডিম্বানুকে শুক্র বীর্যের সাহায্যে নিষিক্ত করে ‘petri-dish’ – এ কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ
তৈরি করে সেই ভ্রূণ আঠটি
কোষযুক্ত (eight cell stage) অবস্থায় এলে
তাকে মাতৃজরায়ূতে সংস্থাপন করা
হয় । ল্যাপ্রোস্কপি
-র (laproscopy) মাধ্যমে এই ডিম্বানুগুলিকে সংগ্রহ করা হয় । এই
ডিম্বানুগুলির সাথে কয়েকটা শুক্র (পুরুষ দেহের) যোগ করা হলে petri-dish – এ ডিম্বানুগুলির নিষিক্তকরন সম্পূর্ণ হয় । নিষিক্ত হওয়ার সাথে সাথে ডিম্বানুগুলির
প্রত্যেকটি রূপান্তরিত
হয় এক একটি এককোষি ভ্রূণে । ৪৮ ঘন্টা এই ভ্রূণগুলিকে ইনকিউবিটরে রাখা হলে এক একটি এককোষি
ভ্রূণেরা আঠকোষি ভ্রূণে
পরিনত হয় এবং সেগুলিকে
জরায়ূতে পুনঃসংস্থাপন করলে , একটি মাত্র
ভ্রূণ জরায়ুতে প্রোথিত হয় ও
বাকিগুলি নষ্ট হয়ে যায় । এই প্রোথিত ভ্রূণ(implanted embryo) মাতৃজঠরে
স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা তৈরি করে ।
এই হলো আধুনিক
যুগের আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের
প্রেক্ষাপটে নলজাতকদের খুব সংক্ষিপ্ত ইতিহাস । ভারতবর্ষেও এ ব্যাপারটি এখন জলভাত হয়ে আসছে । তবে সত্যিকারের নলজাতক অর্থাৎ শতকরা একশোভাগ নলজাতক এখনও এ যুগের পৃথিবীতে
জন্মায়নি , যদিও , মহাভারত অন্য কথা বলে ।
মহাভারতে এমন
কিছু অদ্ভুত অদ্ভুত জন্মকাহিনী
আছে যাদের প্রক্ষিপ্ত অংশটুকু বাদ দিলে , সেগুলি খাঁটি
নলজাতক তা
অনায়াসবোধ্য । রাজা সগরের রানী বৈদর্ভী অলাবু (লাউ) প্রসব করলে তা
থেকে বিশেষ
পদ্ধতিতে জন্ম নেয় সগর রাজার ষাঠ হাজার সন্তান । পন্ডিতগনের মধ্যে এই লাউ একটি বড় সড়ো মাংসপিন্ড । শিবের
পরামর্শে লাউ – এর মধ্যে থেকে
বীজ বার করে তাকে ষাঠ
হাজার ভাগে ভাগ করে রাজা সগর সেগুলির প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথক ঘৃতকুম্ভে (test tube) রাখেন এবং
পরবর্তীকালে এখান থেকেই ষাঠ হাজার প্রবল
পরাক্রমী সন্তান লাভ করেন যারা নিজদোষে মহর্ষি কপিলের অভিশাপে ভস্মীভূত হন । এক্ষেত্রে সগর রাজার ষাঠ
হাজার সন্তানকে আমরা নিঃসন্দেহে পরিপূর্ণ
নলজাতক বলতে পারি ।একই ভাবে গান্ধারী প্রসূত মাংসপিন্ড থেকে ব্যাসদেব তৈরী করেন দুর্যোধন , তার ভাইদের এবং বোন দুঃশলাকে ।
এরা সম্ভবতঃ
পুরোপুরি ‘ নলজাতক ‘ তৈরীর খাঁটি উদাহরন । কৌরব ও পান্ডবদের অস্ত্রগুরু
দ্রোনাচার্য-র
জন্মবৃত্তান্ত এই তথ্যকে
যথেষ্ট সমর্থন করে । গঙ্গোত্রী প্রদেশে বসবাস করতেন সেযুগের বিখ্যাত ভরদ্বাজ মুনি । একদিন স্বর্গের
অপ্সরা ঘৃতাচীকে স্নানরতা অবস্থায় দেখে যৌন
উত্তেজনার বশে তার বীর্য্পাত (ejaculation) হয় । ঋষি সেই শুক্র কে মাটিতে পড়তে না দিয়ে একটি পাত্রের
মধ্যে (petri-dish জাতীয়) ধরে রাখেন ।
কিছুদিন পর ঐ পাত্র বা দ্রোনি থেকে জন্ম হয় এক পুত্র সন্তানের । দ্রোনি থেকে জাত বলে এর নাম হয় দ্রোন ।
দ্রোনের স্ত্রী কৃপীও কিন্তু ছিলেন নলজাতক । তার
জন্মবৃত্তান্তটি এখানে উল্লেখ করা দরকার । মহর্ষি গৌতমের এক অনুগামী ছিলেন যার নাম শরদ্বান । ঋষি
শরদ্বান বেদে তেমন পারদর্শীতা
লাভ করতে না পারলেও
ধনুর্বেদে তিনি অসম্ভব দক্ষতা লাভ করেন । একবার তিনি ইন্দ্রত্ব লাভের তপস্যায় মগ্ন হন । পাছে
ইন্দ্রত্ব হাতছাড়া হয়ে যায় , সেই ভয়ে
দেবরাজ ইন্দ্র স্বর্গের অপ্সরা জ্ঞানপদীকে পাঠালেন শরদ্বানের তপস্যা ভঙ্গ করতে । জ্ঞানপদীকে দেখে মোহিত
শরদ্বানের হাত থেকে ধনুর্বান পড়ে গেল এবং
তার বীর্যপাত হয় । সেই বীর্য গিয়ে পড়ল শর-স্তম্ভ বা তূনে , অর্থাৎ যেখানে
তীর রাখা হয় । সেখনে পড়ে তা দুভাগ হয় এবং দুটি যমজ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় । এরাই হলেন যমজ ভাই-বোন কৃপ ( অস্ত্রগুরু
কৃপাচার্য ) ও কৃপী ( দ্রোনের পত্নি )। অর্থাৎ দেখা
যাচ্ছে , পৌরাণিক কালে ‘ নলজাতক ‘ রা পূর্ণ
মাত্রায় বিদ্যমান , তা শুধু
আধুনিক চিকিত্সাবিজ্ঞানের ‘ পিতৃদত্ত সম্পত্তি ‘ নয় ।
উপরিউক্ত
আলোচনা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে ‘ জন্ম ‘ এবং
জন্মসংক্রান্ত আরো জটিল পরিক্ষা নিরীক্ষা আধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞানের বহু আগে থেকেই ঋকবৈদিক
সভ্যতায় গভীর প্রভাব ফেলেছিল । জন্ম
সম্বন্ধীয় সেই সব পর্যালোচনা আধুনিক বিজ্ঞানকেও পেছনে ফেলে দেয় । সগর রাজার ষাঠ হাজার সন্তানের জন্ম অথবা
ধৃতরাষ্ট্র ও গন্ধারীর একশো এক সন্তান ধারন , অস্ত্রগুরু দ্রোন ও কৃপাচার্যের জন্ম
বৃত্তান্ত বা ভগীরথ ও দৃষ্ঠদ্যুম্ন -র মতন বিখ্যাত কিংবদন্তীদের জন্মরহস্য – এসবই কোথাও না কোথাও অধুনিক পৃথিবীর অত্যাধুনিক বিজ্ঞানকে
নানাবিধ প্রশ্নের সামনে দাঁড় করায় । অধুনিক বিজ্ঞানের আস্ফলন কোথায় যেন হারিয়ে যায় এইসব
পৌরাণিক কীর্তিকালাপের
বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও মননের সান্নিধ্যে। অথচ এই সব তথ্যকে শুধুমাত্র তথ্য-র খাতিরে উড়িয়ে দেয়া বা উপেক্ষা করা অসম্ভব । অশ্বিনীদ্বয়ের মতন চিকিত্সকের সফল
উপস্থিতিও সেখানে প্রাসঙ্গিক । ‘ জন্ম ‘ ও অপ্রাকৃতিক জন্মের এই ইতিহাস বোধহয়
কমবেশি পৃথিবীর সকল সভ্যতার বিজ্ঞান মানসিকতার আঁতুরঘর , তাই একে
অস্বীকারের জায়গা নেই ।
জন্ম এবং জন্ম
বিষয়ক আবিস্কার ও পরিক্ষা নিরীক্ষা
পুরাকালেও চলেছে এবং আধুনিক কালেও তা সমান ভাবে গতিশীল । নলজাতক সম্পর্কে অধুনিক বিজ্ঞান অনেকটাই উন্নতি
করেছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও করবে । আমরা আশা রাখি
, ভগীরথ – কৃপ -কৃপী – দ্রোনের মতন
সার্থক নলজাতক শুধু ইতিহাস বা
কিংবদন্তীর পাতায় নয় , উঠে আসবে
আমাদের ই সামনে । আধুনিক পৃথিবীর
রঙ্গমঞ্চে । আমরা শুধু সেদিনের ‘ পুনঃজন্মে’ র অপেক্ষায় আছি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন