মঙ্গলবার, অক্টোবর ০১, ২০১৩

ভারতের মন্দিরগুলিতে দু'হাজার টন সোনা রয়েছে : দানের সোনা লুকোতে ব্যস্ত মন্দির

সোনা আগলাতে কোমর বেঁধে নেমেছে ধনী মন্দিরের পরিচালন কমিটি এবং ট্রাস্টি বোর্ডগুলি৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক নির্দেশের জেরে এই সোনা বাঁচাও-এর ডাক৷

সোনার আমদানিতে রাশ টানতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক৷ ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সোনা আমদানির খরচ অনেকটাই বেড়েছে৷ এই খরচ কমাতে অর্থ মন্ত্রক সুপারিশ করেছিল, মন্দিরগুলির সোনা ব্যাঙ্কে রাখা হোক৷ এতে বাজারে সোনার জোগান বাড়বে৷ ফলে আমদানি কম করতে হবে৷ নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে সুদ সমেত সেই সোনা ফেরত দেবে ব্যাঙ্কগুলি৷ অর্থ মন্ত্রকের এই সুপারিশ মেনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ধনী মন্দিরগুলির কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে সংগ্রহে থাকা সোনার হিসেব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে৷ এতেই বেজায় চটেছেন বিভিন্ন মন্দিরের কর্তৃপক্ষ৷ দেবতার নামে উত্‍সর্গ করা সোনা হাতিয়ে বিক্রি করার জন্যই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই নির্দেশ দিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা৷

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের হিসেব অনুযায়ী ভারতের মন্দিরগুলিতে দু'হাজার টন সোনা রয়েছে৷ এখন তার দাম ৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় ৫ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার-ও বেশি৷ সঞ্চিত এই সোনার কিছু অংশ ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখলে আমদানি অনেকটাই কম করতে হবে বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক৷
তবে অর্থনীতির এই জটিল তত্ত্ব মানতে রাজি নয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বিজেপি৷ সোনা বাঁচাতে রীতিমতো সোচ্চার হয়েছে এই দু'টি দল৷ কেলারার ধনী মন্দিরগুলির সিংহভাগই এ নিয়ে রীতিমতো রণংদেহি অবস্থান নিয়েছেন৷ কেরালার গুরুভায়ুর মন্দিরে প্রচুর পরিমাণ সোনা সঞ্চিত আছে৷ মন্দিরের ১১০ ফুট উঁচু ধ্বজস্তম্ভটি সোনায় মোড়া৷ সঞ্চিত এই সোনার কোনও হিসেব দেবেন না, রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে তা জানিয়ে দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ৷ পরিচালন বোর্ডের সদস্য ভি এম গোপাল মেনন এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, 'ভগবানকে সোনা দিয়েছেন ভক্তরা৷ সেই সোনার হিসেব দিতে ভক্তরা রাজি নন৷' এতে মন্দিরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলেও মন্তব্য তাঁর৷ একই মন্তব্য কেরালার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সম্পাদক ভি মোহনন৷ 'কয়েকশো বছর ধরে ভক্তদের দান করা সোনা জমা রয়েছে মন্দিরে৷ এর হিসেব নেওয়ার অধিকার কারও নেই৷'-এমনটাই মন্তব্য তাঁর৷ কেরালার ২৮০০টি মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা তিনটি বোর্ড এবং কোচিনের মন্দির পরিচালনার বোর্ডও জমা সোনার হিসেব দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে৷

তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে৷ ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির কর্তৃপক্ষ ১০ কেজি সোনা ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রেখেছে৷ তিরুপতি মন্দিরও গচ্ছিত রেখেছে ২২৫০ কেজি সোনা৷ সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুভাষ ভিত্তল মায়েকার জানিয়েছেন, 'আমাদের কাছে যে সোনা রয়েছে, তা জাতীয় সম্পত্তি৷ এগুলি নিয়ে দেশের যদি লাভ হয়, তাহলে আমরা গর্ববোধ করব৷' সংবাদসংস্থা
সৌজন্যে : এই সময়

কোন মন্তব্য নেই: