--- লিখেছেন কুসুমিকা সাহা
যশোধরা রায়চৌধুরীর লেখা একটি আর্টিকল আজ আনন্দবাজারে পড়লাম...মনে হল ওই
প্রসঙ্গে তো আমারও কিছু বলার
আছে...কিছু কেন? বিস্তর আছে...শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্রী রোজ চাজ্মের
(যিনি তিন মাসের জন্যে পড়াশোনার কাজে ভারতবর্ষে এসেছিলেন এবং ভারতীয় পুরুষদের অসভ্যতার শিকার হয়েছিলেন) ভাষায়
বর্ণিত ' মেয়েদের জন্যে অসম্ভব বিপজ্জনক' এই ভারতবর্ষে আমারও জন্ম যে...
ওই সব অযাচিত দৃষ্টি, স্পর্শ, উক্তির শিকার তো আমি এবং আমাদের মত আরও বহু মেয়েরা, সেই কোন মেয়েবেলার শুরু থেকেই...
'ধর্ষণ' শব্দটা শুনলেই এই যে এক বিষজ্বালা শিরশির করে নেমে যায় পায়ের পাতা অবধি, তা বোধহয় আশৈশব বয়ে নিয়ে চলা ওই কুৎসিত উপলব্ধিগুলো থেকে রক্তক্ষরণেরই ফলাফল। যে কোন ধর্ষণের পর, মোমবাতি
মিছিলের পাশাপাশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে দেখি প্রতিবাদের ঢল নামে। আবার সেই সেখানেই, কোন মেয়ে
তার সুন্দর প্রোফাইল পিকচার আপলোড করলে বলা হয় 'ইনভিটেশন দিচ্ছে'...কিসের ইনভিটেশন? ইফ
সো, হোয়াই ডু ইউ পিপল অ্যাক্সেপ্ট দ্যাট? সুন্দর থাকতে চাওয়াটা এবং নিজেকে সুন্দর দেখাতে চাওয়াটা কোন অপরাধের তালিকাভুক্ত? কেউ সপ্রশংস দৃষ্টিতে তাকালে ভালো লাগে, কিন্তু হায়...চোখে এক্স-রে মেশিন বসিয়ে দেখাটাই জোটে বেশি...ফলে ভাবতে বাধ্য
হই...ব্লাউজের পিঠটা
বেশি কাটা হয়ে গেলো না তো? স্লিভলেস
ব্লাউজটাও না পরলেই বোধহয় ভালো ছিল...তার পরে ভাবি, ছোটবেলায়
মায়ের মুখে শুনেছি বা দেখেওছি দিদিমা ঠাকুমারা কোনওদিনই ব্লাউজ পরতেন না... এবং বোরখা পরিহিতাদের যে এধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়না এমনও নয়...তাহলে?? ওই সব অযাচিত দৃষ্টি, স্পর্শ, উক্তির শিকার তো আমি এবং আমাদের মত আরও বহু মেয়েরা, সেই কোন মেয়েবেলার শুরু থেকেই...
'ধর্ষণ' শব্দটা শুনলেই এই যে এক বিষজ্বালা শিরশির করে নেমে যায় পায়ের পাতা অবধি, তা বোধহয় আশৈশব বয়ে নিয়ে চলা ওই কুৎসিত উপলব্ধিগুলো থেকে রক্তক্ষরণেরই ফলাফল। যে কোন ধর্ষণের পর, মোমবাতি
জ্ঞান হওয়ার পর আমাদের প্রথম শিক্ষা 'অমন বলতে নেই, ওসব করতে নেই, ওখানে যেতে নেই'...আর তা শিখে শিখে নিজেদের বেঁধেই চলি আমরা, পাকে পাকে এবং যত সত্বর সম্ভব সাত পাকে...তার পরও কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? কখনও কখনও কি আরও দুগুণ চারগুণ দশগুণ হয়ে দাঁড়ায় না?? 'ম্যারিটাল রেপ' তো বহুপরিচিত শব্দ আজ...সম্মতিক্রমে যা সুন্দর এবং কাম্য, বলপ্রয়োগে তাইই কি অবাঞ্ছিত দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায় না?
ছোটবেলায় পুরুষ আত্মীয় বা অনাত্মীয়ের কোলে উঠতে কাছে যেতে ভয়, তার কিছুদিন পর রাতের দিকে রাস্তায় বেরোতে ভয়, কলেজ যাওয়ার সময় বাসে যাব বলে অনাবশ্যক একটা এক্সট্রা ফাইল ক্যারি করার কারণ ভয়, আর তারও পর আরও ভয়...ঘরে ভয়, বাইরে ভয়...প্রতিবাদ করলে ভয়, চুপ করে থাকলে ভয়...উফফফফফফ ভারতীয় পুরুষ...রেহাই দাও এবার... বদলে যাও, মানুষ হও, জায়গা দাও...সমানে সমানে...
(এর পরেও বলি...এক্সেপশনস্ আর অলওয়েজ দেয়ার, অ্যান্ড উই উইমেন আর ট্রায়িং টু বিলিভ ইট...হার্ড, ভেরি হার্ড)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন