লিখেছেন :অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ভিখারি বা ভিক্ষা কথাটা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠবে এক শ্রেণির মানুষগুলোর চেহারা যারা আর্তকন্ঠে অন্যের কাছে সাহায্যপ্রার্থী হয়ে হাত পেতে আছে -- দাবি অর্থ অথবা খাবার। যে মানুষটা সাহায্য চাইছে সে কী তার বাঁচার সম্ভাব্য সবগুলো উপায় বন্ধ হয়ে গেছে ? উত্তর অবশ্যই “না”! বেশির ভাগ
ভিখারি তাদের ভিক্ষাবৃত্তি পেশা হিসাবে সানন্দে গ্রহণ করেছে । অতএব ভিক্ষাবৃত্তি একটি লাভজনক পেশা – যে পেশায় ন্যূনতম বিনিয়োগ নেই, পরিশ্রম নেই। শুধু নাটক বা ড্রামাটা ঠিকঠাক করতে পারলেই কেল্লা ফতে। এই আয়করবিহীন উপার্জনের উপায় হিসাবে “ভিক্ষাবৃত্তি” রাষ্ট্রীয় ভাবে আইন প্রণয়ন করে বন্ধ করে দেওয়া উচিত, অবিলম্বেই।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, “ভিক্ষাবৃত্তি হচ্ছে ক্ষতস্বরূপ;এর দ্বারা
মানুষ তার মুখমণ্ডলকে ক্ষতবিক্ষত করে”। (সামুরা ইবনে জুনদুব(রা.) থেকে বর্ণিত;সুনান আবু দাঊদ হাদিস ১৬৩৫)
বৈদিক যুগে বা তারও পরবর্তী সময়ে সমগ্র
ব্রাহ্মণগণ “ভিক্ষাং দেহি” বলে গৃহস্থের
বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বাজখাঁই কণ্ঠে চিৎকার পাড়ত। এরপর পান থেকে চুন খসলেই অভিশাপ-অভিসম্পাত। দুর্বাশার কথা মনে পড়ছে ? “লাখ টাকার
ভিখারি ব্রাহ্মণ”-দের দ্বিজজীবনই শুরু হয় ভিক্ষাগিরি করে। তারপর
সারাজীবন যাতে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন নির্বাহ করা যায় তারই হাজার একটা ফন্দি-ফিকির। সময় বদলেছে। ভারতভূমির কোলে বারবার বিদেশিদের আক্রমণের ফলে
ব্রাহ্মণদের ব্রাহ্মণগিরি সব ঘেঁটে গেছে। আমার ছোটোবেলায় ব্রাহ্মণ পরিচয়ে ভিক্ষা
করতে দেখলেও এখন আর কোনো ব্রাহ্মণ-ব্যক্তি ব্রাহ্মণ পরিচয়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করেন
না। অন্তত আমি দেখি না। তার কারণ পেশার পরিবর্তন। অতএব ব্রাহ্মণগণ বিলক্ষণ বুঝলেন
ভিক্ষাবৃত্তি এখন আর সম্মানে বিষয় নয়, বরং ঘৃণার বিষয়। ব্রাহ্মণগণ ভিক্ষাবৃত্তি
ছাড়লেও বৃহৎ অব্রাহ্মণগণ ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণগণের পরিত্যক্ত পেশাকে আকড়ে
ধরলেন রোজগারের পথ হিসাবে।
আসুন তো এই বৃত্তিটাকে একটু তলিয়ে দেখি।দেখি এই আমাদের নজরে আসা ভিখারিরাই কি সত্যিকারের ভিখারি, নাকি এই ভিক্ষাবৃত্তিটা একটা সামাজিক অভিশাপ। আমাদের পাশের
রাষ্ট্র বাংলাদেশ, অবশ্যই প্রতিবেশী।
এই পেশাকে কেন্দ্র করে কী হয়েছিল সেখানে ? কতজন মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত ? এই তথ্য সংগ্রহ করতেই বাংলাদেশ সরকার একটা উদ্যোগ নিয়েছিলো ।কিন্তু এই ভিখারিদের ছবি দেখিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ এনে বিলাসী গাড়ি চালানো এনজিও(NGO)-রা হাইকোর্টে রিট করে সেই উদ্যোগটাকে স্থগিত করে রেখেছে।মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।ভিক্ষাবৃত্তির কী কোনো অবসান হবে না !কোনো উপায় কী নেই ? অবশ্যই আছে। অভাব শুধু মানসিকতার এবং উদ্যোগের। আমাদের সমাজে ভিখারি এবং ভিক্ষাবৃত্তিকে জিইয়ে রেখেছেন দুই শ্রেণির মানুষ।একদল মানুষ আরেকদল মানুষকে করুণা করে নিজেরা আত্মতৃপ্তিতে ভোগার সুযোগ হারাতে রাজি নন। আর-এক দল পুণ্যলোভী, এরা মনে করে ভিখারিকে ভিক্ষে দিয়ে সারাজীবনের পাপ-ক্লেদ ধুয়েমুছে ফেলতে পারবে। সেইজন্য এরা দেখবেন
ভিখারিদের দেওয়ার জন্য কিছু পয়সা অগ্রিম বাজেটে রাখে। মন্দির-মসজিদগুলোতে দেখবেন
লাইন দিয়ে বসে থাকা ভিখারিদের লাইন দিয়ে ভিক্ষে দিয়ে চলেছেন অনেক ব্যক্তি। দান আর ভিক্ষা এক কথা নয় এটা বুঝে নেওয়া দরকার।“আমায় কিছু সাহায্য করুন, ভগবান আপনার মঙ্গল করবেন” –সব ভিখারিই ধার্মিক হয় ! তাই ধর্মের নামে ভিক্ষা
করে। কেউ আল্লাহর বান্দা, কেউ ভগবানের দাস। হিন্দুধর্মে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ
না-হলেও ইসলাম ধর্মে কিন্তু নিষিদ্ধ। “আল্লাকে নাম কুছ দে দে বাপ” – পোস্টের সঙ্গে
দেওয়া ছবিটি একদল মুসলিম ভিখারির। নিষিদ্ধ কী নিষিদ্ধ না সেটা বড়ো কথা নয় -- তা
সত্ত্বেও পৃথিবী জুড়ে ভিখারি আর ভিক্ষাবৃত্তির ছয়লাপ। বড়ো বড়ো রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, মন্দির-মসজিদ বা যেখানে লোক সমাগম বেশি সেখানে
এদের উপস্থিতি আমাদের সবারই নজরে পরে প্রতিনিয়তই। ছোটো ছোটো
শিশু,অস্থিচর্মসার বৃদ্ধ-বৃদ্ধা,রুগ্ন মহিলা এবং শারীরিক অক্ষম মানুষগুলোর
ভিক্ষের জন্য করুণ আর্তিতে বেদনাহত হয়ে বা অনেক সময় পূণ্যলাভের
আশায় আমরা কিছু সাহায্য করি। কিন্তু আমরা যেটা অনেকেই জানি না যে ওই
ভিক্ষার অর্থ যা আমরা ভিখিরিটির হাতে
তুলে দিলাম তাতে হয়তো তার কোনোই অধিকার নেই।
মূলত ভিক্ষাবৃত্তি একটা মানসিক অবস্থা (সাইকোলজিক্যাল স্টেজ) -- যেখানে আত্মসম্মান আর আত্মমর্যাদাবোধ কাজ করে না।
নিজের সম্পদ আর সাধ্যের মধ্যেই নিজেদের ব্যবস্থাপনাকে নিম্চিত করে । ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বের হওয়ার পথ আছে। সবচেয়ে
আগে দরকার আত্নসন্মান আর আত্নমর্যাদা বোধের উন্মেষ। যেমন নিজেকে মানুষ হিসাবে সম্মান করাব আর তেমনই আর-একজন মানুষের দিকে হাত প্রসারিত করে নিজেকে অসম্মানিত
হতে দেব না। ঠিক তেমনই সামাজিকভাবেও নিজেরা সচেতন থেকে ভিক্ষার মাধ্যমে
কোনো অগৌরবের সৌধ না-বানিয়ে – নিজেদের সাধ্যের মধ্যেই নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখব।
গ্রামে-গঞ্জে,রাস্তাঘাটে,অফিস-যানবাহনে ভিখারিদের উপদ্রব ক্রমশ বেড়েই চলেছে। অনেক সময় তারা প্রায় পথরোধ করে ভিক্ষা দাবি করে পথচারীদের বিব্রত করে থাকে। কিছু ভিখারি নিশ্চিত ভিক্ষালাভের কৌশল হিসাবে নিজেদের বিকলাঙ্গ ও বিকৃত চেহারা দেখিয়ে রাস্তাঘাটে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে ভিক্ষা তথা মুদ্রা সংগ্রহ করে। অনেকেই শিশুদের নিয়োজিত করে। করুণ পরিস্থিতি তৈরি করতে দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ভাড়ায় নেওয়া হয় । ভিক্ষাবৃত্তি একটি সামাজিক সমস্যা। দরিদ্রতা এর অন্যতম কারণ। দরিদ্রতার কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকেই ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। এই পথেই দরিদ্র ভিখারিরা সচ্ছল ভিখারি হয়ে ওঠে। লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যাংক-ব্যালান্স হয়। অর্থ-উপার্জনের সহজ পথ হিসাবে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসাবে বেছে নেয় । অথচ ভিক্ষাবৃত্তি মানবতার চরম অবমাননা। এটা স্বীকৃত বা সম্মানজনক কোনো পেশা নয়। তবু পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মানুষের মধ্যেই ভিক্ষাবৃত্তির প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তবে তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলিতে ভিখারির সংখ্যা ও তৎপরতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি । কতিপয় মানুষ “প্রকৃতই” শারীরিক অক্ষমতার কারণে , অশক্ত বয়স্ক মানুষ ও কর্মশক্তিহীন দরিদ্র মানুষ প্রয়োজনীয় সামাজিক সহযোগিতা না পেয়ে বা অন্য কোনো কাজ করতে পারার দক্ষতা না-থাকায় বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করে থাকে। বেশিরভাগ ভিখারিই কর্মক্ষম। কাজ করতে বললে বা কাজ দিতে চাইলে তারা বিরক্ত প্রকাশ করে ভিক্ষা না নিয়েই চলে যাবে। তারা মূলত অলস ও কর্মবিমুখ। ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে শুধু দরিদ্ররাই জড়িত নয়,এর সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনও সম্পৃক্ত। তারা ভিক্ষুকদের ব্যবহার করে অর্থোপার্জন করে । দিনের শেষে ভিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত অর্থের বেশির ভাগই তাদের হাতে তুলে দিতে হয়। তাই ভিখিরিদের সংগঠন বা সিন্ডিকেট দেখা যায়। ভিখারিদের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট অঞ্চলে ভিক্ষে করতে বাধ্য করানো হয় । কোনো ভিখারি তার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় ভিক্ষে করতে পারে না। এইসব সিন্ডিকেটে কর্তারা বিভিন্ন জায়গায় লোক (আড়কাঠি) ছড়িয়ে রাখে শিশুদের অপহরণ করার জন্য। শিশুদের অপহরণ করে তাদের হাত-পা ভেঙে বিকলাঙ্গ করে কিংবা চেহারা বিকৃত করে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করানোর গ্রুপ যথেষ্ট সক্রিয় আছে। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাস, বড়ো বড়ো মন্দির-মসজিদ,যেখানে প্রচুর লোক সমাগম হয় সেসব জায়গায় এই চক্রগুলো বিশেষভাবে সক্রিয়। এই চক্রের লোকেরা এদের জন্য আস্তানার,খাবারের,পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করে, তার পরিবর্তে তাদের ভিক্ষালব্ধ রোজকারের বেশি অংশটাই নিয়ে নেয়। এদের চক্রে না যুক্ত হলে কেউ ওইসব জায়গায় ভিক্ষা করতে পারবে না। ফলে এরা বাধ্য এদের জালে পড়তে। মহিলা ভিখারিদের অনেক সময় দেখা যায় কোলে বাচ্ছা নিয়ে, তাতে দাতার মন ভেজাতে সুবিধে হয় । এই বাচ্ছাগুলো তাদের নিজেদের নাও হতে পারে, চুরি করা বা ভাড়া করা।
গ্রামে-গঞ্জে,রাস্তাঘাটে,অফিস-যানবাহনে ভিখারিদের উপদ্রব ক্রমশ বেড়েই চলেছে। অনেক সময় তারা প্রায় পথরোধ করে ভিক্ষা দাবি করে পথচারীদের বিব্রত করে থাকে। কিছু ভিখারি নিশ্চিত ভিক্ষালাভের কৌশল হিসাবে নিজেদের বিকলাঙ্গ ও বিকৃত চেহারা দেখিয়ে রাস্তাঘাটে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে ভিক্ষা তথা মুদ্রা সংগ্রহ করে। অনেকেই শিশুদের নিয়োজিত করে। করুণ পরিস্থিতি তৈরি করতে দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ভাড়ায় নেওয়া হয় । ভিক্ষাবৃত্তি একটি সামাজিক সমস্যা। দরিদ্রতা এর অন্যতম কারণ। দরিদ্রতার কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকেই ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। এই পথেই দরিদ্র ভিখারিরা সচ্ছল ভিখারি হয়ে ওঠে। লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যাংক-ব্যালান্স হয়। অর্থ-উপার্জনের সহজ পথ হিসাবে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসাবে বেছে নেয় । অথচ ভিক্ষাবৃত্তি মানবতার চরম অবমাননা। এটা স্বীকৃত বা সম্মানজনক কোনো পেশা নয়। তবু পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মানুষের মধ্যেই ভিক্ষাবৃত্তির প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তবে তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলিতে ভিখারির সংখ্যা ও তৎপরতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি । কতিপয় মানুষ “প্রকৃতই” শারীরিক অক্ষমতার কারণে , অশক্ত বয়স্ক মানুষ ও কর্মশক্তিহীন দরিদ্র মানুষ প্রয়োজনীয় সামাজিক সহযোগিতা না পেয়ে বা অন্য কোনো কাজ করতে পারার দক্ষতা না-থাকায় বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করে থাকে। বেশিরভাগ ভিখারিই কর্মক্ষম। কাজ করতে বললে বা কাজ দিতে চাইলে তারা বিরক্ত প্রকাশ করে ভিক্ষা না নিয়েই চলে যাবে। তারা মূলত অলস ও কর্মবিমুখ। ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে শুধু দরিদ্ররাই জড়িত নয়,এর সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনও সম্পৃক্ত। তারা ভিক্ষুকদের ব্যবহার করে অর্থোপার্জন করে । দিনের শেষে ভিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত অর্থের বেশির ভাগই তাদের হাতে তুলে দিতে হয়। তাই ভিখিরিদের সংগঠন বা সিন্ডিকেট দেখা যায়। ভিখারিদের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট অঞ্চলে ভিক্ষে করতে বাধ্য করানো হয় । কোনো ভিখারি তার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় ভিক্ষে করতে পারে না। এইসব সিন্ডিকেটে কর্তারা বিভিন্ন জায়গায় লোক (আড়কাঠি) ছড়িয়ে রাখে শিশুদের অপহরণ করার জন্য। শিশুদের অপহরণ করে তাদের হাত-পা ভেঙে বিকলাঙ্গ করে কিংবা চেহারা বিকৃত করে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করানোর গ্রুপ যথেষ্ট সক্রিয় আছে। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাস, বড়ো বড়ো মন্দির-মসজিদ,যেখানে প্রচুর লোক সমাগম হয় সেসব জায়গায় এই চক্রগুলো বিশেষভাবে সক্রিয়। এই চক্রের লোকেরা এদের জন্য আস্তানার,খাবারের,পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করে, তার পরিবর্তে তাদের ভিক্ষালব্ধ রোজকারের বেশি অংশটাই নিয়ে নেয়। এদের চক্রে না যুক্ত হলে কেউ ওইসব জায়গায় ভিক্ষা করতে পারবে না। ফলে এরা বাধ্য এদের জালে পড়তে। মহিলা ভিখারিদের অনেক সময় দেখা যায় কোলে বাচ্ছা নিয়ে, তাতে দাতার মন ভেজাতে সুবিধে হয় । এই বাচ্ছাগুলো তাদের নিজেদের নাও হতে পারে, চুরি করা বা ভাড়া করা।
ভিক্ষাবৃত্তি যুগে যুগে যুগে অবহেলিত ও ঘৃণিত
হলেও এই পেশাকে উন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষ হিসাবে তাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অধিকার আছে খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান,চিকিৎসার
অধিকার ভোগ করার। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে তারা এসব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এ বঞ্চনার দায় সরকার ও সমাজের বিত্তশালীরা এড়াতে পারে না। যে সমাজে ভিক্ষুক থাকে, সে সমাজের বিত্তশালীরা সম্মানিত হতে পারে না। অপরদিকে ভিখারি জনগোষ্ঠীর ভোটে নির্বাচিত শাসকরাও তো গর্ববোধ করতে পারে না।
যিনি ভিখারিদের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি আর
যাই-ই হোক সমাজের ভালো চান না। তাই মর্যাদাপূর্ণ সমাজ ও দেশ গড়তে হলে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করা অপরিহার্য।
২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে রাজধানীতে শুরু হয়েছে ভিখারি জরিপের কাজ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ জরিপ কাজ পরিচালনা করছে ১০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিকভাবে জরিপের লক্ষ্ হল ১০ হাজার ভিক্ষুকের নাম-ঠিকানা, ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা। এদের মধ্য থেকে ২ হাজার ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করার কথা রয়েছে।
২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে রাজধানীতে শুরু হয়েছে ভিখারি জরিপের কাজ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ জরিপ কাজ পরিচালনা করছে ১০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিকভাবে জরিপের লক্ষ্ হল ১০ হাজার ভিক্ষুকের নাম-ঠিকানা, ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা। এদের মধ্য থেকে ২ হাজার ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করার কথা রয়েছে।
ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে
নতুন আইন পাশ হচ্ছে। ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করতে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে
একটি আইনও পাশ করেছে সরকার। পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের পথ-ঘাট থেকে ভিক্ষাবৃত্তিকে পুরোপুরিভাবে মুছে দিতে চায় সরকার ৷ তাই ভিক্ষাবৃত্তিকে বেআইনি ঘোষণা করতে এবং এই প্রথাটিকে বন্ধ করতে সংসদে একটি বিলও পাশ করা হয়েছে ৷ অনুমোদিত আইনের
বলে যে-কোনো ব্যক্তিকে ভিক্ষারত অবস্থায় গ্রেফতার করা হলে তাকে
একমাসের জন্য জেলে পাঠানো যেতে পারে ৷ এ আইন তাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে যারা কি না অসুস্থতার ভান করে বা প্রতিবন্ধী সেজে ভিক্ষা করে ৷ সে দেশের অর্থমন্ত্রী এ.এম.এ মুহিত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছিলেন, বর্তমান
সরকার পাঁচ বছরের মধ্যে দেশ থেকে ভিক্ষাবৃত্তিকে দূর করে দেবে ৷
কারণ ভিক্ষাবৃত্তির নামে যারা প্রতারণা করছে বা
ব্যবসার ফাঁদ পেতেছে তাদের চিহ্নিত ও নির্মূল করতে হবে। ভিক্ষাবৃত্তি কোনো
পেশা নয়। এটাকে পেশা হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। মাস গেলে এঁদের কারও রোজগার
২৫ হাজার,কারও ১৫ হাজার আবার কারও বা ৮ হাজার টাকা। বিশ্বব্যাপী মন্দার কথা এঁদেরও জানা। যে কাজটা করেন তা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন পেশা, ভিক্ষাবৃত্তি। আর তাতেই রোজগার মাসে ২৫ হাজার টাকা! শুনলে প্রথমটায় অবিশ্বাস্য লাগতে পারে অনেকেরই। কিন্তু সদ্য পুজোর মরসুম কাটিয়ে আসা নসিয়া-সুবল-রাধাকান্তরা জানালেন,ছুটিছাটা না নিলে রোজগারটা আরও বাড়ানো যেতে পারে। তাঁদের সোজাসাপটা কথা,“মন্দা-টন্দা বুঝি না। মাথা ঠান্ডা রেখে চললে এ পেশায় মার খাওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে হ্যাঁ,লেগে থাকতে হবে।” এঁদের অনেকেই
রীতিমতো মহাজন। বাজারের ব্যাপারি থেকে ক্রেতা
অনেকেই এঁদের কাছ থেকে টাকা ধার নেন। মূল ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত হয় ওই সুদের আয়।
কয়েক জনের তো ব্যাংকে অ্যাকাউন্টও আছে। সুবল নায়ক তার প্রমাণ। তিনিও তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ভিক্ষা করেন। দুজনে মিলে বড় জোর ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা রোজগার করেন মাসে। নসিয়া জানান, তাঁরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং সাধারণ
লোককেও এক মাসের জন্য ধার দেন। ১০০ টাকার সুদ মাসে ৭ টাকা থেকে ১০
টাকা। টাকা চোট যায় না ? ফোঁস করে ওঠেন নসিয়া,“আমাদের টাকা মারা অত সহজ নয়।” তবে নাসিয়া-সুবলরা যেটা বলেননি,তা জানা গেল বাজারে। শুধু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাই নয়,এই ভিক্ষুকদের কাছে ঋণ নেয় চোলাই ঠেকের
মালিক ও ড্রাগ মাফিয়ারাও। টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে এরা একশো ভাগ সৎ। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোটিপতি সুনিতার ভিক্ষাবৃত্তির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
কী ভাবছেন বন্ধু ? ধর্ম-সংকটে পড়ে গেলেন কী ! আসুন পথ খুঁজি, মত বিনিময় করি।
“আর ভিক্ষা নয়, কেবল পুনর্বাসন চাও”। আসুন, একটা ভিখারিমুক্ত দেশ গড়ি। ভিখারিকে ভিক্ষা দিয়ে
সমাজকে পঙ্গু করার দায়িত্ব আপনি কেন নেবেন ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন