লিখেছেন : সুদীপ নাথ
সন্তানের খাওয়া নিয়ে আজকালকার আধুনিক মায়েরা, বিশেষত মধ্যবিত্ত ও ধনী
পরিবারে, খুবই বিব্রত। মায়েদের অভিযোগ দু’ধরনের। একটি পরিমাণগত অর্থাৎ
সন্তানের আগ্রহ কম বা খেতেই চায়না। দ্বিতীয়টি হল, সন্তান নিজের ইচ্ছে মত
বাছ-বিচার করে খেতে চায় অর্থাৎ ‘এটা খাবনা, ওটা খাব’ করে।
আমি যদি এমন সমস্যায় ভুগছে, কোন মাকে প্রশ্ন করি, “আপনার সন্তান কি
চানাচুর, চাটনি, ফাস্টফুড এসব খেতে চায় ?” তখন অবশ্যই উত্তর আসে “হ্যা”।
এই সমস্যায় জর্জরিত এমন মা খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি কোন দিন ওনার সমস্যা
সমাধানের জন্য কোন ডাক্তারের পরামর্শ চাননি।
এই সমস্যায়, ডাক্তারবাবুরা বিভিন্ন জন বিভিন্ন
রকমের ভূমিকা নেন। কিছু
ডাক্তার বাবু ধমকের সুরে মাকে বলেন- “আপনার তাতে কী ক্ষতি ? আপনার সন্তানের
স্বাস্থ্য তো ভালই আছে”। কোন ডাক্তার বাবু মাকে আশ্বস্ত করে বলেন- “এ নিয়ে
বেশি চিন্তার দরকার নেই, ক্ষিদে পেলে পেলে ও খাবে নিজে থেকেই”। এমনও
ডাক্তার বাবু আছেন, যিনি ওনার অমূল্য সময় নষ্ট করে মাকে বুঝিয়ে দেন শিশুদের
খাওয়ার ইচ্ছেটা কিসের উপর নির্ভর করে এবং মায়েরই বা করনীয় কী আছে। আর বেশি
সংখ্যক ডাক্তার বাবু, মায়ের দিকে চেয়ে, একটা ওষুধের তালিকা ধরিয়ে দেন এবং
ওনার ফি’টা বুঝে নেন।
বেশির ভাগ মায়েরাই ডাক্তার ছাড়াও, আত্মিয়-পরিজনদের থেকেও পরামর্শ নেন। ফলে
সব তালগোল পাকিয়ে যায়। কি করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, যতক্ষণ না শেষোক্ত
ডাক্তার বাবুর সঙ্গে দেখা হয়।
... ডাক্তার বাবু ওষুধ লিখে দেন... শিশু ওষুধ খায়... তরতরিয়ে বাড়ে খিদে...
মা নিশ্চিন্ত হন... হন, ডাক্তার বাবুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ... ওষুধ শেষ হলে
খিদেও শেষ হয়... আবার ডাক্তার... আবার সেই ওষুধ...
কিছুদিন এভাবে চলার পর, ডাক্তার বাবুর কাছে আর যেতে হয়না। ওষুধের দোকান
চেনা হয়ে যায়। ওষুধের নাম মুখস্থ হয়ে যায়। ওষুধ চাইলে, দোকানদার
প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঐ ওষুধ দিয়ে দেয়। মা-ও নিশ্চিন্ত হন। ডাক্তারের
চেম্বারে যাওয়ার ঝক্কি থেকে মা এখন মুক্ত। ফি’র খরচও বেঁচে যায়।
কিন্তু এর সামনে ও পেছনে রূঢ় বাস্তবটি মায়ের অলক্ষ্যেই থেকে যায়। মা একবারও
ভেবে দেখেন না, এই ওষুধের আদৌ প্রয়োজন ছিল কিনা বা তা বাচ্চার পক্ষে
কতটুকুই বা নিরাপদ।
এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে কয়েকটা বিষয়কে একসাথে দেখতে হবেঃ-
১। খিদে পাওয়া বা না পাওয়ার শারীরিক কারণ
২। খিদে বাড়াবার ওষুধ কিভাবে কাজ করে
৩। শিশুর পারিবারিক পরিবেশ কেমন
৪। মা-বাবা শিশুকে কিভাবে গড়ে তুলতে চান
প্রথমেই খিদে অনুভবের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাক। সাধারণত যে ধারণাটি
আমাদের সমাজে প্রায় সবাই পোষণ করেন তা হল- পেট খালি হলেই খিদে পায়। এই
ভ্রান্ত ধারণা থেকেই আমরা মনে করি, খিদে উদ্রেক করার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাই
আমাদের শরীরের এই সংক্রান্ত একমাত্র ব্যবস্থা। এটা আমাদের অনেকেরই অজানা
যে, শরীরে খিদে দমন করারও আলাদা একটা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা রয়েছে।
আবার, আমরা অনেকে এমন ধারনাও পোষণ করি যে, খাওয়ার অনিচ্ছা মানেই খিদে
উদ্রেককারী ব্যবস্থা ঠিকমত কাজ না করা। তার একটা কারণও হয়ত আছে এবং তাই
তাঁর চিকিৎসাও হয়ত আছে।
আসলে যা ঘটে, তা এরকম। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস গ্রন্থিতে দুটো অংশ আছে।
তার একটা হচ্ছে ফিডিং সেন্টার আর অন্যটা হচ্ছে সেটাইটি সেন্টার। এই দুটি
সেন্টারের কাজ পরস্পরবিরোধী। ফিডিং সেন্টারের কাজ হচ্ছে খিদে উদ্রেক করা।
অপরদিকে, সেটাইটি সেন্টারের কাজ হচ্ছে খিদে দমন করা। তবে উভয়েই যার যার
কাজটি সমাধা করে সেরিব্রাল করটেক্সের মাধ্যমেই।
পেট তথা পাকস্থলী খালি হলেও, ফিডিং সেন্টার সেরিব্রাল করটেক্সকে উত্তেজিত
করবে না, যদি রক্তে গ্লকোজ থাকে। প্রসঙ্গতঃ পাকস্থলীর খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায়
প্রথমে রক্তে গিয়ে মেশে। তারপর রক্তবাহিত হয়ে সমস্ত কোষে গিয়ে পৌছয়। তাই
পাকস্থলী খালি হলেও, রক্তে খাবার শেষ হতে অনেকটা সময় লাগে। পাকস্থলী ও
রক্তে গ্লোকোজ নিঃশেষ হলে, তবেই ফিডিং সেন্টার কাজ শুরু করে। মনে অনুভূত
হবে খাদ্যের চাহিদা।
অপরদিকে, রক্তে গ্লোকোজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সেটাইটি সেন্টার খিদে দমন করে
রাখে। এ তো গেল শারীরিক চাহিদা ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ। এছাড়াও মুখরোচক খাবার
দেখলে বা গন্ধে আমাদের ফিডিং সেন্টার উত্তেজিত হয়। অপরদিকে
বিটা-অ্যাড্রেনার্জিক স্টিমুলেশন বা স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের উত্তেজনার
ফলে সেটাইটি সেন্টার উত্তেজিত হয় এবং খাওয়ার ইচ্ছা দমিত হয়ে যায়। এই
বিটা-অ্যাড্রেনার্জিক স্টিমুলেশনের একটি সাধারণ বহিঃপ্রকাশ হল উদ্বেগ।
তাছাড়া জ্বর এবং বিশেষ কিছু অসুখেও ক্ষুধামান্দ দেখা দেয়, তবে তা সাময়িক।
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে খিদে বাড়ানোর ওষুধগুলোর ভূমিকা। ডাক্তারেরা যেসকল ওষুধ
সাধারণত দিয়ে থাকেন, তার মধ্যে অন্যতম হল সাইপ্রহেপ্টাডিন, যা বাজারে
হাবিজাবির সাথে মিশিয়ে বিভিন্ন নামে বিক্রি করা হয়। তারমধ্যে খুবই পরিচিত
কয়েকটির নাম হচ্ছে সাইপন, এপিটোন, সিপ্লাকটিন, সাইপী ইত্যাদি।
এই সাইপ্রহেপ্টাডিন আসলে একটা এন্টি-হিস্টামিনিক অর্থাৎ এলার্জির ওষুধ। এটা
মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস গ্রন্থিতে সেরোটোনিনের কাজ ব্যহত করে। ফলে,
খিদে উদ্রেক হয় ঠিকই, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ি ফল দিতে পারেনা। এটা দিয়ে
মা’কে আশ্বস্ত করা যায়, আর তাই এর বাজার এতো রমরমা। কিন্তু তার সাইড
এফেক্টের ফলে, বাচ্চার খিদে পাবার আগ্রহ স্থায়িভাবেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
দীর্ঘ দিন ব্যবহারে, ঘুম ঘুম ভাব কিন্তু ঘুম না হওয়া, মাথা ঘোরা, হাত-পায়ে
কাঁপুনি, ঠোট-মুখ শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে।
ছোটদের পক্ষে সবসময় অতশত বুঝিয়ে বলা সম্ভব হয় না। তাই এসব সকলের নজর এড়িয়ে
যায়। খিদে বাড়ার আনন্দে, মা-বাবাও এসব উপেক্ষা করে চলেন। সবচেয়ে ভয়ের বিষয়
হল, তা থেকে যদি এগ্রানোলুসাইটিক এন্জিনা হয়, তখন তা আর ভাল করা যায় না।
সেই ডাক্তার বাবুরও এমতাবস্থায় কিছু করার থাকেনা, যিনি মাকে এই ওষুধের খবর
দিয়েছিলেন। তখন চোখের জল মায়ের বুক ভাসায়। সাইপ্রহেপ্টাডিন ছাড়াও, অন্য
কিছু এন্টি-হিস্টামিন, কিছু মনোরোগের ওষুধ, স্টেরয়েড, ইনসুলিন ইত্যাদিও
খিদে বাড়ায়। এগুলি বাচ্চাদের দেয়া হয়না। তবে অতীতে, এনাবলিক স্টেরয়েড আখছার
দেয়া হত। এখন তা নিষিদ্ধ ওষুধের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
এবার আসা যাক শিশুর পারিবারিক পরিবেশ কিভাবে তার খাওয়ার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ
করে, সেই প্রসঙ্গে। পারিবারিক পরিবেশ সরাসরি শিশুর মনকে প্রভাবিত করে। যে
বাড়ির পরিবেশ প্রীতিময় নয়, যেখানে মা-বাবা সবসময় কলহে লিপ্ত, বাবা মদ্যপ,
শিশুর প্রতি উদাসীন বা শিশুকে সর্বদা ভুল-ত্রুটির জন্যে দোষারোপ করেন বা
রুচি-অরুচির বালাই না করে শিশুকে একঘেয়ে খাবার খেতে অনবরত চাপ সৃষ্টি করেন,
তখন শিশুটি এতই প্রভাবিত হয় যে, তার খাওয়ার ইচ্ছা ক্রমেই দূর হতে থাকে।
মনে রাখতে হবে, সন্তানকে অত্যধিক শাসন করলে, সে জেদ মেটানোর উপায় হিসেবে,
খাবারের প্রতি অনাগ্রহ দেখাবে। মা-বাবাকে শাস্তি দেয়ার অন্যতম হাতিয়ার
শিশুর কাছে বমি বা অনশন। এটা অনেকেই বুঝেও বোঝতে চান না।
অনেক মা-বাবাই এটা মেনে নিতে চাননা যে, তাদের সন্তানও এমন একটা মানবীয়
প্রাণী, যার নিজস্ব সুবিধা অসুবিধা থাকতেই পারে। বিশেষতঃ এগার-বার বছর বয়েস
অবধি শিশুর বেশিরভাগ গ্রন্থি-ই পূর্ণতা পেতে থাকে। এগুলোর নিঃসারিত
হরমোনের প্রভাবে তখন শিশুমনে বিচিত্র উপলব্ধির আগমন ঘটে। তাই, যখন তখন তারা
তাদের মত পরিবর্তন করে। ফলে, আজ যা গপাগপ পেট পুরে চেটেপুটে খেয়ে নেয়, কাল
তা ঠেলে দূরে সরিয়ে দিতে পারে। আর তখনই মায়েরা বিভ্রান্তির শিকার হন।
বাচ্চাদের কেন, বড়দেরও একঘেয়ে খাবারে অরুচি আসে। তাই বাচ্চাদের খাবারের
তালিকা ঘন ঘন পালটানো দরকার। জোরজবরদস্তি একেবারেই বন্ধ করতে হবে। ভুতের
ভয়, জুজুর ভয়, পশুপাখির ভয়, প্রহার করার ভয় ইত্যাদি যেকোন ভয় দেখিয়ে,
ভুলিয়ে-ভালিয়ে, অনুরোধ-উপরোধ করে, লোভ দেখিয়ে বাচ্চাকে যে মা খাওয়াতে
চেষ্টা করবে, সেই মার কপালে দুঃখ আছে। যা যা খাওয়াতে হবে, সেসব একসময়
খাওয়াতে হবে। দুটি মূল খাবারের মধ্যে বিশেষত খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে, অল্প
খাবারও দেয়া চলবে না। যেমন, রান্না হতে দেরি হলে দুটো বিস্কিট ধরিয়ে দেয়া।
এতে রক্তে গ্লোকোজ থাকলে মূল খাবার ব্যহত হয়।
শেষ বিষয় হচ্ছে, শিশুকে মা-বাবা তাদের অপূরিত আশা-আকাঙ্খা পূরণের হাতিয়ার
তথা যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চান কিনা। যে মা-বাবারা নিজেদের অপূরিত
চাহিদা মেটাতে সর্বদা বাচ্চাকে চাপের মুখে রাখেন, তাদের সন্তান হয় বিদ্রোহী
হতে বাধ্য হবে, নয়ত নিওরিসিসে আক্রান্ত হবে। যেমন ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার বা
অতি মেধাবী হিসেবে গড়ে তোলা, সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী করা ইত্যাদি। এসব
উদ্দেশ্য থেকেই আহারের সময়, পরিমাণ ও প্রকৃতি সম্পর্কে খুব কড়াকড়ি নিয়ম
বেধে দেয়া হয়। শিশুর স্বাধীন ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে পাত্তা দেয়া হয়না। এর থেকেই
সূত্রপাত হয় ক্ষুধামান্দের। দিন থেকে দিনে এই সমস্যা গাঢ়তর হয়। অথচ এর জন্য
দায়ি তার পিতা, মাতা, দিদিমা, ঠাকুমারাই। নিওরিসিসে আক্রান্ত বাচ্চারা,
খাওয়ার সময় হলেই, মায়ের বা দিদিমা-ঠাকুমার, অর্থাৎ যিনিই খাওয়ান, তার
মুখখানা দেখলে বা চিন্তা করলেই, সেটাইটি সেন্টার উত্তেজিত হবে এবং খাওয়ার
ইচ্ছা দমিত হয়ে যাবে।
নিওরিসিসের একটা প্রধান লক্ষণ বমি। শিশুরা বমি করে নিওরিসিসে আক্রান্ত হলে।
আর বালক-বালিকারা বমি করে মাবাবাকে টাইট দেয়ার লক্ষ্যে। যে পরিবারে
অশান্তি লেগে থাকে, সেইসব পরিবারে দেখা যায়, বড়রা কখনো কখনো, রাগ করে খান
না। এমন পরিবারে ছোটরাও অপূরিত বায়নার জন্যে খাওয়া বন্ধ করে রাখে। মনে
রাখতে হবে, বমি সবার ক্ষেত্রেই গুরুতর স্বাস্থ্যহানি ঘটায়, যার প্রতিবিধান
সম্ভব নয়। আর, ছোটবেলার নিওরোসিস, প্রায়শই সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে, ভবিষ্যৎ
দুর্বিষহ করে তোলে।
তাছাড়া রয়েছে, অতিরিক্ত ক্লান্তি, কোন প্রতিযোগিতা বা পরীক্ষায় অসাফল্য,
স্কুলে অনুপযোগী পরিবেশ ইত্যাদি। আবার এমনও দেখা যায়, সে হয়ত পড়াশুনা বা
কোন সৃষ্টিশীল বা বিনোদনমূলক কাজে এতটাই বিভোর, যার কাছে খাওয়াটা নিতান্তই
বিরক্তিকর বা নেহাতই সময়ের অপব্যবহার বলেই মনে হয়।
শিশুদের তথা বালকবালিকাদের খিদের অভাব, দুর্বলতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে
ক্রিমি সংক্রমণের কথাও মনে রাখতে হবে। আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ
ছিল চৌদ্দ বছর বয়েস অব্দি তিন মাস অন্তর ক্রিমির ওষুধ খাওয়ানো। এখন প্রতি
মাসে একবার খাওয়ানোর কথা বলে। ক্রিমির ওষুধের সাইড এফেক্ট নেই বললেই চলে।
দুবছর থেকে বড়-ছোট সবার সমান ডোজ। অথচ বেশিরভাগ ডাক্তারই হাফ ডোজ সাত দিন
অন্তর খেতে বলে, যা চিকিৎসা শাস্ত্রের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়না। মনে করার
যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, রোগী যেন তাদের কাছে বার বার আসে, সেই পথ সুগম করে
রাখা ছাড়া আর কিছুই নয়।
শিশুর খিদে হ্রাস হলে কি করা দরকার ? যা করতে হবে তা হল, ক্ষুধামান্দ নিয়ে
প্রকাশ্যে ভালমন্দ কোন মতব্য না করা। খেতে চাইছে না ? শান্ত ভাবে ও বন্ধুর
মত তাকে টেবিল ছেড়ে যেতে দিন। সন্ধ্যে অব্দি না খেয়ে থাকুক। শেষ পর্যন্ত
স্বাভাবিক স্বজ্ঞাই জয়ী হবে এবং শিশু খেতে চাইবে। তবে সন্ধ্যের আগে তাকে
কোন খাবার দেবেন না, এমনকি সে যদি খেতে চায়ও। সস্নেহে বুঝিয়ে দিন যে, খাবার
খেতে হয় নির্দিষ্ট সময়ে। তবে সেদিন রাতের খাবার অন্য দিনের চেয়ে একটু আগেই
দেবেন। ক্ষুধার্ত শিশুর সহনশীলতা পরীক্ষা করে কোন লাভ নেই। তাছাড়া খাবার
দেখতেও আকর্ষনীয় হতে হবে। মন মাতানো গন্ধে যেন আপনার শিশুকে আকর্ষন করে।
অনেকেই প্রতিদিন ছোটদের সেই এক পেঁপে সেদ্ধ দিয়ে খেতে বসায়। আর নিজেদের
মনগড়া কতসব বাঁধাধরা মেনুর বাইরে যেতে চান না। বাচ্চারা সব খাবে। তবে উইনিং
পিরিয়ড ( ৬-১২ মাস বয়েস) আলাদা ভাবে বিবেচ্য। এক বছর বয়েস থেকে শিশু নিজের
হাতে খাবে।
প্রখ্যাত মার্কিন শিশু চিকিৎসক বেঞ্জামিন স্পক সেই কবে বলেছেন-
“প্রতিপালকের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশুকে খেতে বাধ্য করা নয় – সেই পরিবেশ সৃষ্টি
করা যাতে সে নিজে থেকেই খেতে চাইবে”।
1 টি মন্তব্য:
ধন্যবাদ, সুন্দর এই লেখাটির জন্য।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন