লিখেছেন : অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সতীদাহ প্রথা হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে বা আত্মহুতি দেবার ঐতিহাসিক প্রথা। এই প্রথা একসময়ে হিন্দুনারীদের ঘাড়ের উপর জব্বরভাবে চেপে বসেছিল। এখন সেই প্রথা এক্কেবারে বন্ধ হয়ে গেছে একথা বুকে টোকা মেরে বলার কলজে আমার কোথায় ! আশির দশকে সেই রূপ কানোয়ারের কথা মনে আছে ? তাই এ লেখার উপস্থাপনের প্রাসঙ্গিকতা আছে বইকি ! ইতিহাসটাকে নতুন করে দেখা প্রয়োজন।
আর নতুন ইতিহাস লেখার সময় নাটের গুরু কে খুঁজবেন না ? কারা সতীদাহ বা স্বামীর চিতায় বিধবা স্ত্রীর সহমরণ প্রথা জিইয়ে রেখেছিল ? কারাই-বা এই অমানবিক সহমরণকে নির্মূল করার জন্য সদিচ্ছা প্রয়োগ করেছিল ? দাক্ষায়ণী (সংস্কৃত: दाक्षायणी) বা সতী (সংস্কৃত: सती) হিন্দুধর্মে বৈবাহিক সুখ ও দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনের দেবী। হিন্দু নারীরা সাধারণত স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনায় সতীর পূজা করে থাকেন। সতী দেবীর এক রূপ। তিনি শিবের প্রথমা স্ত্রী। হিন্দু পুরাণ অনুসারে তিনি তপস্বীর জীবনযাত্রা থেকে শিবকে বের করে আনেন এবং গৃহী করেন। দক্ষযজ্ঞের সময় স্বামীর অসম্মান সহ্য করতে না পেরে তিনি প্রাণত্যাগ করেন। পরে হিমালয়ের গৃহে কন্যা পার্বতীর রূপে জন্ম নিয়ে পুনরায় শিবকে বিবাহ করেন।
দাক্ষায়ণীর অপরাপর নামগুলি হল উমা, অপর্ণা, শিবকামিনী ইত্যাদি। ললিতা সহস্রনাম স্তোত্রে তাঁর এক সহস্র নাম লিখিত হয়েছে।
সতীর আত্মত্যাগের অনুকরণে হিন্দুধর্মে সতীদাহ প্রথা প্রবর্তিত হয়েছিল অনেকে মনে করেন। এই প্রথানুসারে স্বামীর মৃত্যুর পর হিন্দু বিধবারা স্বামীর চিতায় আরোহণ করে প্রাণ বিসর্জন দিতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর “সতী” কবিতায় লিখেছেন –
সতীলোকে বসি আছে কত পতিব্রতা,
পুরাণে উজ্জ্বল আছে যাঁহাদের কথা।
আরো আছে শত লক্ষ অজ্ঞাতনামিনী
খ্যাতিহীনা কীর্তিহীনা কত-না কামিনী--
কেহ ছিল রাজসৌধে কেহ পর্ণঘরে,
কেহ ছিল সোহাগিনী কেহ অনাদরে;
শুধু প্রীতি ঢালি দিয়া মুছি লয়ে নাম
চলিয়া এসেছে তারা ছাড়ি মর্তধাম।
তারি মাঝে বসি আছে পতিতা রমণী
মর্তে কলঙ্কিনী, স্বর্গে সতীশিরোমণি।
হেরি তারে সতীগর্বে গরবিনী যত
সাধ্বীগণ লাজে শির করে অবনত।
তুমি কী জানিবে বার্তা, অন্তর্যামী যিনি
তিনিই জানেন তার সতীত্বকাহিনী।
গুপ্ত সাম্রাজ্যের আগে থেকেই এ প্রথার প্রচলন সম্পর্কে ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়। গ্রিক দিগ্বিজয়ী সম্রাট আলেকজান্ডারের সাথে ভারতে এসেছিলেন ক্যাসান্ড্রিয়ার ঐতিহাসিক অ্যারিস্টোবুলুস। তিনি তক্ষশীলা শহরে সতীদাহ প্রথার ঘটনা তার লিখনিতে সংরক্ষণ করেছিলেন। গ্রিক জেনারেল ইউমেনেসের এক ভারতীয় সৈন্যের মৃত্যুতে তার দুই স্ত্রীই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সহমরণে যান;এ ঘটনা ঘটে ৩১৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ।
মূলত স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই পতির মৃত্যুতে স্ত্রী অগ্নিতে আত্মাহুতি দিত –একথা বারবার বলার চেষ্টা হয়েছে পেটুয়া ইতিহাসগুলোতে। পৌরাণিক কাহিনিতে এই আত্মাহুতি অতিমাত্রায় শোকের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখা হত। মহাভারতে পাণ্ডুর স্ত্রী মাদ্রি সহমরণে যান (কিন্তু কুন্তী যাননি,অর্থাৎ মাদ্রি স্বেছায় যান এ কাহিনিও ফাঁদা হয়েছে)। রাজপুতানায় "জহর ব্রত" প্রচলিত হয়েছিল যাতে কোনো শহর দখল হওয়ার পূর্বেই পুরনারীরা আত্মসম্মান রক্ষার্থে আগুনে ঝাঁপ (জহর বা বিষ) দিয়ে স্বেছায় মৃত্যুবরণ করতেন,যা সতীদাহের অনুরূপ বলে অনেকে দাবি তোলেন। বলেন সতীদাহ প্রথা রাজপুতরাই চালু করেছিল। পরে এই বিষ নাকি পুরো অখণ্ড এবং বৃহৎ ভারতে ছাড়িয়ে পড়েছিল। কালক্রমে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে হিন্দু স্ত্রীকে সহমরণে বাধ্য করা হত। বিশেষ করে কোনো ধনী লোকের মৃত্যুর সম্পত্তি অধিকার করার লোভে তার আত্মীয়রা তার সদ্যবিধবা স্ত্রীকে ধরে বেঁধে,ঢাক-ঢোলের শব্দ দ্বারা তার কান্নার আওয়াজকে চাপা দিয়ে তার স্বামীর সাথে চিতায় শুইয়ে পুড়িয়ে মারত। আর এ ঘটনা ঘটানোর ইন্ধন জোগাত “বর্ণশ্রেষ্ঠ”ব্রাহ্মণরাই। তাঁদের চরম উৎসাহেই এই প্রথা মহিরূহের আকার ধারণ করেছিল। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এখনও অনেক ব্রাহ্মণ বা ধর্মগুরুরা এই নৃশংস (ক্রিমিনাল অফেন্স !) প্রথা মর্মে মর্মে সমর্থন করার সাহস পায়।রাষ্ট্র নীরব দর্শকের ভূমিকায়।অবাক হই না, একসময় তো হিন্দু রাজারাই এই ব্যবস্থাকে কখনো প্রত্যক্ষ কখনো-বা পরোক্ষে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
আচ্ছা আমরা কি দেখে নিতে পারি হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থে সতীদাহের কোনো নির্দেশ বা সমর্থন আছে কি না ! চলুন -- মধ্যযুগে যখন ধর্মব্যবসায়ী এবং বিদেশিদের চক্রান্তে সনাতন ধর্মালম্বীদের বেদজ্ঞান হয়ে পড়েছিল অতি দুষ্প্রাপ্য তখন সমাজে অনুপ্রবেশ করে সতীদাহ প্রথা নামক ঘৃণ্য প্রথা।এ ছাড়াও বিধবা নারীদেরকেও পুনরায় বিয়ের সুযোগ না থাকায় অনেক নিপীড়িত হতে হয়,তারা যেন ছিল এক বোঝা। তবে রামমোহন রায় এবং বিদ্যাসাগরদের মতো মহান ব্যক্তিত্বরা বেদের মাধ্যমে এসব প্রথাকে ভুল প্রমাণ করেন এবং হিন্দুসমাজ রক্ষা পায় এক কলঙ্কজনক অধ্যায় থেকে। অধুনা কিছু লোক বেদের কিছু মন্ত্রের রেফারেন্স দেয় সতীদাহ প্রথার পক্ষে। তারা অথর্ববেদ (১৮.১.১-২) রেফারেন্স দেয়। মজার বিষয় হল রেফারেন্সটা দেখলেই বোঝা যায় যে তারা জীবনেও এই মন্ত্রগুলো পড়েনি। কারণ দেখা যায় যে ওই মন্ত্র দুইটি সতীদাহ প্রথাকে সমর্থন তো দুরে থাক,বরং স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর সুখী জীবন নিশ্চিত করতে বলেছে এবং প্রয়োজনে পুনরায় বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছে। দেখা যাক বেদ এর মন্ত্রগুলো-
ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম্।
ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্ম্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।।(অথর্ববেদ ১৮.১.৩)
(মর্ত্য-হে মনুষ্য,ইয়ং নারী-এই স্ত্রী,পতিলোকম- ¬পতিলোককে অর্থাৎ বৈবাহিক অবস্থাকে,বৃণনা- ¬কামনা করিয়া,প্রেতম-মৃ¬ত পতির,অনু-পরে,উপ ¬ ত্বা-তোমার নিকট,নিপদ্যতে-আসিতেছে,পুরাণম-সনাতন,ধর্ম্মম-ধর্মকে,পালয়ন্তী-পালন করিয়া,তস্য-তাহা¬র জন্য,ইহ-এই লোকে,প্রজাম্-সন্তানকে,দ্রবিণং- ¬এবং ধনকে,ধেহি-ধারণ করাও)
অর্থাৎ,হে মনুষ্য! এই স্ত্রী পুনর্বিবাহের আকাঙ্খা করিয়া মৃত পতির পরে তোমার নিকট আসিয়াছে। সে সনাতন ধর্মকে পালন করিয়া যাতে সন্তানাদি এবং সুখভোগ করতে পারে।
অন্যত্র একই ভাবে এ বলা হয়েছে-
ইয়ং নারী পতিলোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্বা মর্ত্য প্রেতম।
বিশ্বং পুরাণ মনু পালয়ন্তী তস্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।।(তৈত্তিরীয় আরণ্যক ৬.১.৩)
অর্থাৎ,হে মনুষ্য!মৃত পতির এই স্ত্রী তোমার ভার্যা। সে পতিগৃহ সুখের কামনা করিয়া মৃত পতির পরে তোমাকে প্রাপ্ত হইয়াছে।কীরূপভাবে? অনাদি কাল হইতে সম্পূর্ণ স্ত্রী ধর্মকে পালন করিয়া। সেই পত্নীকে তুমি সন্তানাদি এবং ধনসম্পত্তি সহ সুখ নিশ্চিত কর।
পরের মন্ত্রটি দেখি,
অথর্ববেদ ১৮.৩.২(এই মন্ত্রটি ঋগবেদ ১০.১৮.৮ এ ও আছে)
উদীষর্ব নার্ষ্যভি জীবলোকংগতাসুমেতমুপশেষ এহি।
হস্তাগ্রাভস্য দিধিষোস্তবেদং পত্যুর্জনিত্বমভি সংবভূব।।
নারী-হে স্ত্রী! তুমি,এতত্ গতাসুম্-এই গতপ্রাণ পতির ,উপশেষে-শয়ন করিয়া আছ(মায়া ধরে আছ),জীবলোকং অভি উদীর্থ-(মায়া ত্যগ করে)বাস্তবতায় ফিরে এস(জীবলোকে),তব- ¬তোমার,হস্তগ্রাভস্য দিধিষোঃ-পাণিগ্রহণকারী,পত্যুঃ-পতির সঙ্গে,ইদং জনিত্বম-আবার পত্নীত্ব,অভি সংবভুব-সৃষ্টি হল
অর্থাৎ,হে নারী! মৃত পতির শোকে অচল হয়ে লাভ কী?বাস্তব জীবনে ফিরে এসো।পুনরায় তোমার পাণিগ্রহনকারী পতির সাথে তোমার আবার পত্নীত্ব তৈরী হবে।
সায়নভাষ্যে এই মন্ত্রের অর্থ দেখা যায় এরকম-
"হে মৃতপতীর পত্নী!জীবিত পুত্রপৌত্রের লোক অর্থাৎ গৃহের কামনা করে শোক ত্যাগ করো।মৃত পতির মায়া ত্যগ করো।তোমার পাণিগ্রহণকারী পতির স্ত্রী হইবার ইচ্ছায় তুমি নিশ্চিতরূপে অনুসরণ করো।
প্রায় একইভাবে তৈত্তিরীয় আরণ্যক-এ বলা হয়েছে (৬.১.১৪)।
"হে নারী!তুমি এই মৃতপতির মায়ায় আবদ্ধ হয়ে আছ। এই মায়াত্যাগ করো।পুনরায় পতি কামনা করো এবং পাণিগ্রহণকারী বিবাহের অভিলাষী এই পতিকে জায়াত্বের সহিত প্রাপ্ত হও"
অর্থাৎ, মন্ত্র দুটিতে সতীদাহ প্রথার কোনো কথাই নেই, বরং স্বামীমৃত্যুর পর স্ত্রীকে শোকে মুহ্যমান হয়ে না পড়ে শোকত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে বলা হয়েছে এবং প্রয়োজনে পুনরায় বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছে।
সেকি, ধর্মে সমর্থন নেই ! তাহলে এত বড়ো নৃশংস ঘটনা শত শত বছর ব্যাপী সংঘটিত হল কীসের জোরে ? আসুন, অন্বেষণ করি-- হিন্দু সমাজে প্রচলিত বর্বর সতীদাহ প্রথা নিয়ে কিছু বললে তখন কিছু হিন্দু মুমিন(!) দাবি করে যে এটি একটি কুসংস্কার, ধর্মগ্রন্থে এমন কিছু বলা নেই। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট।
অধিকাংশ ধার্মিকরা যে তাদের ধর্মগ্রন্থ না পড়েই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে সেটা তেমন অস্বাভাবিক নয়। কারণ কেউ ধর্মগ্রন্থ বুঝে পড়লে তার নাস্তিকতা ঠেকায় কার সাধ্যি।
হিন্দুরা সম্প্রদায়গণ যেসব গ্রন্থকে তাদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ বলে সম্মান প্রদর্শন করে , ঈশ্বরের বাণী বলে পুজোর সময় শ্লোক আওড়ায়, সেইসব গ্রন্থেই এ বর্বর প্রথার উল্লেখ রয়েছে। রেফারেন্স হিসাবে কয়েকটি সোর্স উল্লেখ করা যেতে পারে :
(১) অথর্ববেদ : “আমরা মৃতের বধু হওয়ার জন্য জীবিত নারীকে নীত হতে দেখেছি।” (১৮/৩/১,৩)।
(২)পরাশর সংহিতা : “মানুষের শরীরে সাড়ে তিন কোটি লোম থাকে, যে নারী মৃত্যুতেও তার স্বামীকে অনুগমন করে, সে স্বামীর সঙ্গে ৩৩ বৎসরই স্বর্গবাস করে।” (৪:২৮)
(৩) দক্ষ সংহিতা : “যে সতী নারী স্বামীর মৃত্যুর পর অগ্নিতে প্রবেশ করে সে স্বর্গে পূজা পায়”।(৪:১৮-১৯)।
(৪) দক্ষ সংহিতা : “যে নারী স্বামীর চিতায় আত্মোৎসর্গ করে সে তার পিতৃকুল, স্বামীকুল উভয়কেই পবিত্র করে।”(৫:১৬০)। যেমন করে সাপুড়ে সাপকে তার গর্ত থেকে টেনে বার করে তেমনভাবে সতী তার স্বামীকে নরক থেকে আকর্ষণ করে এবং সুখে থাকে।
(৫) ব্রহ্মপুরাণ : “যদি স্বামীর প্রবাসে মৃত্যু হয়ে থাকে তবে স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর পাদুকা বুকে ধরে অগ্নিপ্রবেশ করা।”
(৬) মহাভারতের মৌষল পর্বে, কৃষ্ণের মৃত্যুর পর তাঁর চার স্ত্রী রুক্ষিণী, রোহিণী, ভদ্রা এবং মদিরা তাঁর চিতায় সহমৃতা হয়েছিলেন। এমন কি বসুদেবের আট পত্নীও তাঁর মৃত্যুর পরে সহমরণে গিয়েছিলেন।
পাণ্ডু দেহত্যাগ করলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রী তাঁর চিতায় সহমৃতা হয়েছিলেন।
(৭) ব্যাসস্মৃতি বলছে, চিতায় বিধবা নারী তার স্বামীর মৃতদেহে আলিঙ্গন করবেন অথবা তার মস্তকমুণ্ডন করবেন। (২:৫৫)।
(৮) ষষ্ঠশতকের বরাহমিহির তার বৃহৎসংহিতায় বলেন, “অহো নারীর প্রেম কি সুদৃঢ়, তারা স্বামীর দেহক্রোড়ে নিয়ে অগ্নিতে প্রবেশ করে।” (৭৪:২৩)।
(৯) রামায়ণেও আমরা দেখি,রাবণের কাছে বন্দি থাকাকালে সীতার “সতীত্ব” ঠিক ছিল কী-না সেটা জানার জন্য অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। সেটা ভগবান রামও অনুমোদন করে দেন! অথচ,রামের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অধিকার কারও ছিল না!
ধর্মের বাণী সবসময় ফানি হয় না, কোনো- কোনো সময় নিষ্ঠুরও হয়।
কোনো-কোনো ঐতিহাসিকগণ মনে করেন, সতীদাহ প্রথা ভারতে মুসলিমদের আগমনের পর থেকে এবং মুসলিমদের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে,এর আগে ভারতে এই অমানবিক প্রথা ছিল না!
আবার কেউ কেউ মনে করেন, গুপ্ত সাম্রাজ্যের আগে থেকেই ভারতবর্ষে সতীদাহ প্রথার প্রচলন ছিল। প্রাচীন সতীদাহ প্রথার উদাহারণ পাওয়া যায় অন্তর্লিখিত স্মারক পাথরগুলিতে। এ পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাচীন স্মারক পাথর পাওয়া যায় মধ্যপ্রদেশে,কিন্তু সব থেকে বড়ো আকারের সংগ্রহ পাওয়া যায় রাজস্থানে। এই স্মারক পাথরগুলিকে সতী স্মারক পাথর বলা হত যেগুলি পুজো করার বস্তু ছিল [Shakuntala Rao Shastri, Women in the Sacred Laws – The later law books (1960)]। ডাইয়োডরাস সিকুলাস (Diodorus Siculus) নামক গ্রিক ঐতিহাসিকের খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের পাঞ্জাব বিষয়ক লেখায়ও সতীদাহ প্রথার বিবরণ পাওয়া যায় [Doniger, Wendy (2009). The Hindus: An Alternative History. Penguin Books. p. 611]। তাছাড়া, আলেকজান্ডারের সাথে ভারতে বেড়াতে আসা ক্যাসান্ড্রিয়ার ইতিহাসবিদ এরিস্টোবুলুসও সতীদাহ প্রথার বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন। খ্রিস্ট পূর্বাব্দ ৩১৬ সালের দিকে একজন ভারতীয় সেনার মৃত্যুতে তার দুই স্ত্রীই স্বপ্রণোদিত হয়ে সহমরণে যায় [Strabo 15.1.30, 62; Diodorus Siculus 19.33; "Sati Was Started For Preserving Caste" Dr. K. Jamanadas]। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)
এ ছাড়াও আরও অনেক লেখকের অনেক ধরনের বক্তব্য আছে। ফলে সতীদাহ প্রথাকে ভারতবর্ষে ইসলামের আগমনের সাথে মিলিয়ে ফেলা অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করেন কেউ কেউ। অমানবিক সতীদাহ প্রথা নির্মূলীকরণে মুসলিমদের আইনানুগ কোনো অবদান ছিল কি না, সেটাও একটু খতিয়ে দেখা দরকার। আমরা একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারি :১. সতীদাহ প্রথা বন্ধের প্রথম সরকারি প্রচেষ্টা মুসলিমরা করেছিলেন। মুহাম্মদ বিন তুঘলক সর্বপ্রথম এই প্রথা বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। [L. C. Nand, Women in Delhi Sultanate, Vohra Publishers and Distributors Allahabad 1989] ২. মুঘল সম্রাটদের মধ্যে যারা সতীদাহ প্রথা বন্ধ করতে চেয়েছিলেন,তাদের মধ্যে হুমায়ুন স্থানীয় হিন্দুদের প্রতিবাদের মুখে পড়েছিলেন। [Central Sati Act – An analysis by Maja Daruwala is an advocate practising in the Delhi High Court. Courtsy: The Lawyers January 1988. The web site is called "People's Union for Civil Liberties"] ৩. অনেক সময় মুঘল প্রসাশন থেকে বিধবা মহিলাদের পেনশন বা উপহার দেয়া হত সতীদাহ না করার জন্য। ৪. শিশুদের এই প্রথা থেকে রক্ষা করা হয়েছিল। সম্রাট শাহজাহানের সময় নিয়ম ছিল কোনো অবস্থাতেই যেসব মহিলাদের সন্তান আছে তাদের দাহ হতে দেওয়া হবে না। [XVII. "Economic and Social Developments under the Mughals" from Muslim Civilization in India by S. M. Ikram edited by Ainslie T. Embree New York: Columbia University Press, 1964. This page maintained by Prof. Frances Pritchett, Columbia University] ৫. সব থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয় সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়। ১৬৬৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি রুল জারি করেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে মুঘল কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত দেশের কোথাও সতীদাহ ঘটতে সরকারি অনুমতি দেয়া হবে না। ইউরোপীয় পর্যটকদের বর্ণনা অনুযায়ী সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলের শেষের দিকে সতীদাহ প্রথা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, শুধু রাজাদের স্ত্রীরা ব্যতীত। [XVII. "Economic and Social Developments under the Mughals" from Muslim Civilization in India by S. M. Ikram edited by Ainslie T. Embree New York: Columbia University Press, 1964. This page maintained by Prof. Frances Pritchett, Columbia University]
ইসলামের বিভিন্ন শিক্ষা নিয়ে হিন্দু ধর্মের সংস্কারে সৃষ্টি হয় শিখ ধর্ম, যাতে সতীদাহ প্রথা একেবারে নিষিদ্ধ। তার মানে ভারতে সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদের প্রথম অমুসলিম ভারতীয় পদক্ষেপটিও আসে ইসলামেরই প্রভাবে। খারাপকে খারাপ জানতে পারা অনেক বড়ো বিষয়,আর এই কাজটিই ভারতে ইসলাম করেছে। ইসলাম সবাইকে মুসলিম বানাতে না পারলেও ভারতের সার্বিক মূল্যবোধ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সতীদাহ যে একটি অমানবিক প্রথা, নিদেনপক্ষে এটা ভারতীয়দের বোঝাতে পেরেছে – শিখ ধর্মে সতীদাহ নিষিদ্ধ হওয়া তারই একটি বাস্তব প্রতিফলন।
রাজা রামমোহন রায়ও ইসলাম সম্পর্কে গভীরভাবে পড়াশুনা করেন, কোরান-হাদিস অধ্যয়ন করেন এবং মুতাজিলা ও সুফিবাদ দ্বারা প্রভাবিত হন। ফলে তিনি মূর্তি পুজো ছেড়ে দেন এবং একেশ্বরবাদী হয়ে যান। যার ফলশ্রুতিতে পিতার সাথে মতবিরোধের ফলে তাকে গৃহত্যাগ করতে হয় (সূত্র)। তাই একেশ্বরবাদী রাজা রামমোহনের মনন সৃষ্টিতে ইসলামের অবদান অস্বীকার করা যায় না। এজন্য তাঁর দ্বারা সনাতন ধর্মের যদি কোনো উপকার হয়ে থাকে, তাহলে সেই উপকারের পিছনেও ইসলামের নাম চলে আসছে।
সময় ও পরিস্থিতির চাপে পড়ে সতীদাহ প্রথা প্রায় বন্ধ হয়েছে। কেন-না আগে থেকেই ব্রাহ্মণ স্কলার ও প্রভাবশালী হিন্দুরা এই প্রথা বন্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, ধর্ম দিয়ে সতীদাহ প্রথাকে সমর্থন করারও চেষ্টা করা হয়েছে। এও বলা হয়েছে যে, বিধবা নারীদের নির্বাণ লাভের জন্য সতীদাহ একটি পূণ্যের কাজ। [সূত্র: উইকিপিডিয়া]
বাস্তবতা হচ্ছে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে প্রথম বারের মতো পদক্ষেপ নেন সুলতান মুহাম্মদ তুঘলক। এর পর একে একে সম্রাট হুমায়ূন, আকবর, শাহজাহান ও আওরঙ্গজেব সতীদাহ প্রথা বন্ধের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেন। [সূত্র: উইকিপিডিয়া]
কিন্তু সতীদাহ প্রথাকে যেহেতু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পূণ্যের কাজ মনে করা হয়, সেহেতু এরকম একটি প্রথাকে অল্প সময়ে বা চাওয়ামাত্রই নির্মূল করা বাস্তবে সম্ভব নয়। তবে মুঘল সম্রাটরা ধাপে ধাপে এই প্রথা নির্মূলের কাজ অনেকটাই প্রশস্ত করেছিলেন। এই প্রথার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়েছিল। ইউরোপীয় পর্যটকদের বক্তব্য অনুযায়ী আওরঙ্গজেবের শাসনামলের শেষের দিকে সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত না হলেও একেবারে কমে যায়।
রাজা রামমোহন রায়ের আগে পর্যন্ত সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে কোনো হিন্দু সমাজ সংস্কারকের কোনোরকম ভূমিকা খুঁজে পাওয়া যায় না,যেখানে মুসলিম শাসক এবং ইসলামের দর্শনের সংস্পর্শে থেকে সতীদাহ প্রথা প্রায় নির্মূলের পথে এসেছিল। অথচ কয়েক বছরের আন্দোলন প্রচেষ্টার জন্য রাজা রামমোহন রায় ও ব্রিটিশ গভর্নর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংককে সতীদাহ প্রথা বন্ধের পুরো কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে যে প্রথা সমাজের মানুষের মন মগজে পূণ্যকর্ম চর্চা বলে পালিত হয়ে আসছিল সেই প্রথা মাত্র কয়েক বছরে ব্যক্তি বিশেষের প্রচেষ্টায় নির্মূল হয়ে যাবে, সে কথা দাবি করলেও বাস্তববাদীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সতীদাহ প্রথা একসময় হিন্দুদের উচ্চ বর্ণ ও নিম্ন বর্ণ উভয়ের মাঝেই প্রচলিত ছিল। তবে ইসলাম ভারতবর্ষ আসার পর নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা অনেকেই মুসলমান হয়ে যান। তাই সতীদাহ প্রথাটা তখন শুধুমাত্র উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের মাঝেই প্রচলিত ছিল। আবার স্বামী মারা যাওয়ার পর চাইলেই কোনো হিন্দু মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আগুনে পোড়াতে পারত না। সুলতান অথবা ওই এলাকার স্থানীয় মুসলমান শাসকের অনুমতি নিতে হত। যদি হিন্দু মেয়েটা স্বেচ্ছায় আগুনে পুড়তে রাজি হত তাহলেই সুলতান/ স্থানীয় মুসলমান শাসক সতীদাহ প্রথার অনুমতি দিতেন।
বাদশাহ আকবর যখন মুরতাদ হয়ে দ্বীনে ইলাহি ধর্ম প্রচার শুরু করেন তখন মুজাদ্দেদ আলফে সানি রহমাতুল্লাহ আলাইহি বাদশাহ আকবরের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। পরে বাদশাহ আকবর উনাকে বন্দি করেন। বাদশাহ আকবরের মৃত্যুর পর বাদশাহ জাহাঙ্গীর মুজাদ্দেদ আলফে সানি রহমাতুল্লাহ আলাইহির কাছে ক্ষমা চেয়ে উনাকে মুক্ত করে দেন। মুজাদ্দেদ আলফে সানি রহমাতুল্লাহ আলাইহি ওই সময় যে বিভিন্ন চিঠিপত্র লিখতেন যেটাকে মাকতুবাদ বলে এই মাকতুবাদ বা চিঠিপত্রগুলি বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলা অনুবাদ করে বের করেছে। সেইখানে এরকম অনেক কাহিনি পাওয়া যায় যে মুজাদ্দেদ আলফে সানি রহমাতুল্লাহ আলাইহি উচ্চবর্ণের অনেক হিন্দু মেয়েকে বিধবা হওয়ার পর আগুনে পোড়ানোর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। মুজাদ্দেদ আলফে সানি রহমাতুল্লাহ আলাইহি পরে এই হিন্দু মেয়েদের কে মুসলমান বানিয়ে মুসলিম ছেলেদের সাথে বিয়ে দিয়ে দিতেন।
এই যে মুসলমান শাসকদের হিন্দু সংস্কারের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা সেটা সে সময়ে হিন্দুসমাজ সোজা চোখে দেখেছেন বলে অন্তত এ খবর পাইনি। বরং মুসলমান শাসকদের এহেন সক্রিয়তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,অনধিকার চর্চা এবং অন্য ধর্মে অযাচিত হস্তক্ষেপ হিসাবেই নিয়েছে। সতীদাহ প্রথা বন্ধ করলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা সমূহ উপকৃত হবে ভেবে মুসলমান শাসকরা পদক্ষেপ নিয়েছিল একথা বিশ্বাস করাতে চাইলে ঘোড়া ঘুরায় হাসবো।
যাই হোক, লর্ড বেন্টিঙ্ক ১৮২৯ সালে সতীদাহ প্রথাটা নিষিদ্ধ করলেও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার পাশে আগরতলা যেটা ত্রিপুরা প্রদেশের রাজধানী সেইখানে কিন্তু ১৯০০ সাল পর্যন্ত সতীদাহ প্রথা চলছিল। ভেবেছিলাম ভারতবর্ষে সর্বশেষ সতীদাহ প্রথা সর্বশেষ বন্ধ হয়েছিল এই আগরতলা রাজ্যে। কিন্তু তা আর হল কই ! ১৯৮৭ সালের ৪ সেপ্টম্বর আমরা আবার শিহরিত হলাম। রূপ কানোয়ার নামে এক ১৮ বছর বয়সি রাজস্থানি তরুণীর স্বামীর চিতায় সহমরণ !(Roop Kanwar (c. 1969 – 4 September 1987) was a Rajput who was immolated on 4 September 1987 at Deorala village of Sikar district in Rajasthan, India. At the time of her death, she was 18 years old and had been married for eight months to Maal Singh Shekhawat, who had died a day earlier at age 24, and had no children.
Several thousand people attended the sati event. After her death, Roop Kanwar was hailed as a sati mata – a "sati" mother, or pure mother. The event quickly produced a public outcry in urban centres, pitting a modern Indian ideology against a traditional one. The incident led first to state level laws to prevent such incidents, then the central government's Commission of Sati (Prevention) Act.
News reports of the incident present conflicting stories about the degree to which Kanwar's death was voluntary. Some news reports claim Kanwar was forced to her death by other attendees present. At the same time, there are contradictory reports which claim that Roop Kanwar told her brother-in-law to light the pyre when she was ready, supporting the possibility that she was at least resigned to undergoing sati, if not willing.
The original inquiries resulted in 45 people being charged with her murder; these were acquitted. A much-publicized later investigation led to the arrest of a large number of people from Deorala, said to have been present in the ceremony, or participants in it. Eventually, 11 people, including state politicians, were charged with glorification of sati. On 31 January 2004 a special court in Jaipur acquitted all of the 11 accused in the case.-- Wikipedia)
প্রকৃতপক্ষে, রাজা রামমোহন রায় তাঁর এক বৌদিকে জোরপূর্বক সতী বানানোর ঘটনা দেখে ১৮১২ সালের দিকে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন শুরু করেন। তার আগ পর্যন্ত হিন্দুসমাজ সংস্কারকদের মধ্য থেকে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে কোনোরকম আন্দোলনের কথা শোনা যায় না। অন্যের ঘরে যখন আগুন লাগছিল তখন সবাই চোখ বুজে ছিল ধর্মের ভয়ে, যখন নিজের ঘরেই সেই আগুনের আঁচটা লাগল কিছু একটা করতে হবে ভাব মনকে গ্রাস করে নিল। ফলে রাজা রামমোহন রায়ের সাথে সাথে আপামর হিন্দুসমাজ কোনোভাবেই এই প্রথা নির্মূলের কৃতিত্ব দাবি করতে পারে না, এককভাবে তো নয়ই। এখনও সুযোগ দেওয়া হলে বর্ণ হিন্দুদের মধ্যে সতীদাহ প্রথা আবার শুরু হতে পারে , বিশেষ করে ভারতে। কারণ, এই প্রথার পুনঃপ্রচলনে ও একে টিকিয়ে রাখতে ভারতীয় এক শ্রেণির বর্ণ হিন্দুরাই ছিল সবচেয়ে অগ্রগামী। রূপ কানোয়ারের মৃত্যুর পর যেভাবে ভারতের “স্বামী” বা “গুরুজি”বা “হিন্দুমৌলবাদী” জাতীয় ব্যক্তিরা সহমরণের পক্ষে যে বিবৃতি দিচ্ছিলেন তা শুনে খুবই আতঙ্কিত হতে হয়। এইসব গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লরা এরকম বিবৃতি দিতে থাকল তখন রাষ্ট্র শুধুই সব দেখল এবং সব শুনল।কিন্তু বড়োই নির্বিকার !১৮২৯ সালের দিকে ব্রিটিশ শাসনামলে এই প্রথার বিরুদ্ধে পুনরায় আইন করা হলেও পরবর্তীতে সতীদাহের কিছু ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে সতীদাহ প্রথাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়। এসময় বেঙ্গলের গভর্নর ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক । অবশ্য এ আইনি কার্যক্রম গৃহীত হয় মূলত রাজা রামমোহন রায়ের সামাজিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই। এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে লন্ডনের প্রিভি কাউন্সিলে মামলা করা হয় । প্রিভি কাউন্সিল ১৮৩২ সালে বেঙ্গলের গভর্নর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংকের ১৮২৯ সালের আদেশ বহাল রাখেন। খুব অণ্প সময়ের মধ্যে ভারতের অন্যান্য কোম্পানি অঞ্চলেও সতীদাহ প্রথাকে বাতিল ঘোষণা করা হয়।
৪টি মন্তব্য:
এক কথায় অসাধারণ
Valuable post
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
তথ্যবহুল অসাধারন লেখা
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন