লিখেছেন : দীপক রায়
সারা পৃথিবীতে যার
পিছনে মানুষ
সবচেয়ে বেশী
ছোটে, তার
নাম অর্থ। আর এই অর্থকে
কেন্দ্র করে
পৃথিবী জুড়ে
কত না
ঘটনা ঘটে
চলেছে প্রতিনিয়ত। সে যাই হোক,
কিন্তু অর্থের
একক মুদ্রা
এলো কোথা
থেকে? সভ্যতার
আদি যুগ
থেকে বস্তু
সামগ্রীর মূল্য
নির্ধারনে এবং বস্তুর বিনিময়ের মধ্যে
একটা শৃঙ্খলা
আনতে মানুষ
নানা পদ্ধতির
কথা ভেবেছে,
নানা পদ্ধতির
প্রয়োগ করেছে। সেইসব
থেকেই ক্রমে
ক্রমে এসেছে
মুদ্রার ব্যবহার। কিন্তু
একদিনে এখনকার
মতো মুদ্রা
আসেনি।
একসময় পাথর,
লোহা, পিতল,
তামা, ব্রোঞ্জ,
সোনা, রূপো
ব্যবহার হয়েছে
মুদ্রা হিসাবে। পোড়ামাটির
মুদ্রার কথাও
আমরা শুনেছি
ঐতিহাসিকদের বইপত্রে। যতদূর জানা
যায়, ৬৪০
খ্রীষ্টপূর্ব সময়ে মিশর দেশে মেসোপটেমিয়া
অঞ্চলে প্রথম
ধাতুর মুদ্রার
প্রচলন হয়েছিল। সেখানেই
এরপরে টাঁকশালের
জন্ম হয়েছিল। মিশরের
এই টাঁকশালের
মুদ্রা তৈরীর
কৌশল এরপরে
যায় রোমে
এবং বৃহত্তর
ভারতে-চীনে। রোমের
থেকে প্রসারিত
হয়ে যায়
ইওরোপের নানা
দেশে।
তবে ভারতে-চীনে মুদ্রা
তৈরীর কৌশল
মিশরের থেকে
ভিন্ন ছিল
বলে পন্ডিতেরা
মনে করেন।
পঞ্চদশ শতাব্দীতে ইতালিতে মুদ্রা আধুনিক রূপ নেয়। ইতালির টাঁকশালের কারিগরেরাই প্রথম সব মুদ্রার আকার, ওজন ও ছাপ নির্দিষ্ট করেন। এরপর ১৫৫৩ সালে ফরাসীরাই প্রথম যন্ত্রচালিত মুদ্রা নির্মান শুরু করেন। এই প্রযুক্তি ১৬৬২ সালে ইংলন্ডে আরো আধুনিক রূপ পায়। ক্রমে ক্রমে মুদ্রা হালকা ও সৌন্দর্য্য লাভ করতে থাকে। রাজাদের ছবির প্রতিরূপ মুদ্রাতে দেওয়া শুরু হয়। শুরু হয় দেশে দেশে টাঁকশাল নির্মান।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে সোনা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারনের একমাত্র মর্য্যাদা লাভ করলে, সোনার মুদ্রা নির্মান বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৩২ সালের পর থেকে রূপোর মুদ্রা নির্মানও বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালের পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় তামার মুদ্রা নির্মানও। সেই থেকে সারা পৃথিবীতে মুদ্রা প্রধানতঃ এলুমিনিয়ম, ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল আর জিঙ্কের তৈরী হতে থাকে। এদেশে ৬-৮-১৮৬১ তারিখে প্রথম কাগজের নোট চালু হয়েছিল। তবে মুদ্রা হিসাবে কাগজের নোটের ব্যবহার আগে খুব কম ছিল, সেটা ক্রমশঃ বেড়ে গিয়েছে সারা পৃথিবীতেই। সাধারন কাগজের জায়গায় এসেছে আরো উন্নত মানের কাগজ, এসেছে রাসায়নিক দিয়ে তৈরী কাগজের মতো নোট। তবে বেশ কিছু উন্নত দেশে ধাতব মুদ্রা সম্পূর্ন উঠে গিয়েছে। সেখানে মুদ্রা হিসাবে নোটই ব্যবহার হয়ে থাকে।
ভারতীয় উপমহাদেশে টাঁকশালে প্রথম মুদ্রা নির্মিত হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ নাগাদ মগধের রাজত্বকালে। গুপ্তযুগের মুদ্রা বেশ উন্নত মানের ছিল। আলেকজান্ডার উত্তর-পশ্চিম ভারতে অনেক টাঁকশাল তৈরী করেছিলেন। সুলতান শাসনেও টাঁকশালের নির্মান হয়েছিল। কিন্তু সুন্দর, আধুনিক, নান্দনিক মুদ্রা প্রথম তৈরী হয়েছিল মোঘল আমলে। বিশেষ করে সম্রাট আকবর সারা দেশে ৪২ টি নতুন ও আধুনিক টাঁকশালের জন্ম দিয়েছিলেন। এগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার চকবাজারের টাঁকশালটি। ঢাকার টাঁকশালে ২১ টি বিভাগ ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু, ঢাকা ছাড়া মোঘল আমলে বাংলার যশোহরে একটি টাঁকশালের কথা শোনা গেলেও তার কোন প্রমান মেলেনি। তবে বাংলার আর কোথাও টাঁকশাল ছিল বলে জানা যায় না। আরেকটি অবাক করা বিষয় হল, মোঘল আমলে ধাতুর মুদ্রা থাকলেও বঙ্গদেশে মুদ্রা হিসাবে কড়ির প্রচলনও ছিল। সারা দেশে ছোট ছোট রাজারা টাঁকশাল তৈরী করে মুদ্রা বানাতে থাকে। কোচবিহারের রাজাও করেছিলেন এমন টাঁকশাল। মুর্শিদাবাদেও জন্ম হয় টাঁকশালের। এই ধরনের বিশৃঙ্খল আর্থিক অবস্থার অবসান ঘটেছিল এদেশে ব্রিটিশদের আগমনের পর। তারা মোঘল সম্রাটের কাছে টাঁকশাল বানানোর অনুমতি চেয়েছিলেন। অনুমতি না পেয়ে ইষ্ট
ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৭৫৬ সালে মুর্শিদাবাদের টাঁকশালে সপ্তাহে তিনদিন মুদ্রা বানানোর অনুমতি পায়। ১৭৫৭ সালে সিরাজ উদ দৌলার পতনের পরে ১৭৬০ সালে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়ম দূর্গে টাঁকশাল গড়ার অনুমতি পায় তারা। কিন্তু যে কোনও কারনেই হোক ব্রিটিশেরা কিন্তু টাঁকশাল গড়েনি। বরং ১৭৬২ সালে জন প্রিন্সেপ নামক এক ইংরেজ ফলতাতে একটি কারখানায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর নামে মুদ্রা বানাতে থাকেন। ১৭৮৪ সালে জন প্রিন্সেপ ফলতা থেকে ইংলন্ডে ফিরে গেলে কোম্পানী তখন কলকাতায় টাঁকশাল বসানোর কাজ শুরু করেন। ১৭৯৭ সালে কোম্পানী এক আদেশবলে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সব টাঁকশাল তুলে দেয়। কলকাতায় ১৮২৯ সাল পর্যন্ত কিরন শংকর রায় রোডে তাদের তৈরী নতুন টাঁকশালটি চালু ছিল। এরপরে ইংলন্ড থেকে আধুনিক যন্ত্র এনে ষ্ট্যান্ড রোডে নতুন করে টাঁকশাল চালু হল। সেই সময় সারা ভারতের মধ্যে কলকাতা ও বোম্বের দুটি টাঁকশাল ছাড়া সব টাঁকশাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরে ১৯৪১ সালে কলকাতায় আলিপুরে আবার নতুন করে টাঁকশালের নির্মান কাজ শুরু হয়। কিন্তু টাঁকশাল তৈরীর কাজ শেষ হতে হতে দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। সেই আলিপুরের টাঁকশালের যাত্রা কিন্তু আজো বন্ধ হয়নি।
এপ্রসঙ্গে পাঠকদের জানা দরকার, ভারত-পাকিস্থান ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হলেও ১৯৫০ সাল পর্যন্ত টাঁকশালে যেসব মুদ্রা তৈরী হত, সেগুলিতে ব্রিটিশ রাজার ছাপ থাকতো। আস্তে আস্তে ভারত ও পাকিস্থানে (পূর্ব পাকিস্থানে) নতুন দেশীয় মুদ্রা তৈরী হতে থাকে। ঢাকাতে আবার টাঁকশাল চালু হয়। পাই পয়সা, আধ পয়সা, এক আনি, দু আনি তৈরী ও প্রচলন আস্তে আস্তে লোপ পেয়ে যায়। চালু হয় নয়া পয়সা। যা পরিবর্তিত হতে হতে চলছে এখনো।
তবে, অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে, টাঁকশালে শুধু মুদ্রা তৈরীই হয় না। সরকারের নানাবিধ গোপনীয় বস্তুসামগ্রী, ষ্ট্যাম্প, বিভিন্ন পদক, প্রতিরক্ষার গোপনীয় স্মারক ইত্যাদি সেখানে তৈরী হয়। টাঁকশালের কর্মীদের গোপনীয়তা রক্ষার বিশেষ প্রশিক্ষন নিতে হয়। তাদের টাঁকশালের গোপন কথা ও পদ্ধতি বাইরে বলা বারন। তাই টাঁকশালের বহু অজানা বিষয় প্রকাশ্যে আসে না। টাঁকশালের পূর্নাঙ্গ প্রামান্য ইতিহাস তাই পাওয়াও খুব কঠিন। সারা পৃথিবীতে যার পিছনে মানুষ সবচেয়ে বেশী ছোটে, তার নাম অর্থ। আর এই অর্থকে কেন্দ্র করে পৃথিবী জুড়ে কত না ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। সে যাই হোক, কিন্তু অর্থের একক মুদ্রা এলো কোথা থেকে? সভ্যতার আদি যুগ থেকে বস্তু সামগ্রীর মূল্য নির্ধারনে এবং বস্তুর বিনিময়ের মধ্যে একটা শৃঙ্খলা আনতে মানুষ নানা পদ্ধতির কথা ভেবেছে, নানা পদ্ধতির প্রয়োগ করেছে। সেইসব থেকেই ক্রমে ক্রমে এসেছে মুদ্রার ব্যবহার। কিন্তু একদিনে এখনকার মতো মুদ্রা আসেনি। একসময় পাথর, লোহা, পিতল, তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা, রূপো ব্যবহার হয়েছে মুদ্রা হিসাবে। পোড়ামাটির মুদ্রার কথাও আমরা শুনেছি ঐতিহাসিকদের বইপত্রে। যতদূর জানা যায়, ৬৪০ খ্রীষ্টপূর্ব সময়ে মিশর দেশে মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে প্রথম ধাতুর মুদ্রার প্রচলন হয়েছিল। সেখানেই এরপরে টাঁকশালের জন্ম হয়েছিল। মিশরের এই টাঁকশালের মুদ্রা তৈরীর কৌশল এরপরে যায় রোমে এবং বৃহত্তর ভারতে-চীনে। রোমের থেকে প্রসারিত হয়ে যায় ইওরোপের নানা দেশে। তবে ভারতে-চীনে মুদ্রা তৈরীর কৌশল মিশরের থেকে ভিন্ন ছিল বলে পন্ডিতেরা মনে করেন।
পঞ্চদশ শতাব্দীতে ইতালিতে মুদ্রা আধুনিক রূপ নেয়। ইতালির টাঁকশালের কারিগরেরাই প্রথম সব মুদ্রার আকার, ওজন ও ছাপ নির্দিষ্ট করেন। এরপর ১৫৫৩ সালে ফরাসীরাই প্রথম যন্ত্রচালিত মুদ্রা নির্মান শুরু করেন। এই প্রযুক্তি ১৬৬২ সালে ইংলন্ডে আরো আধুনিক রূপ পায়। ক্রমে ক্রমে মুদ্রা হালকা ও সৌন্দর্য্য লাভ করতে থাকে। রাজাদের ছবির প্রতিরূপ মুদ্রাতে দেওয়া শুরু হয়। শুরু হয় দেশে দেশে টাঁকশাল নির্মান।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে সোনা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারনের একমাত্র মর্য্যাদা লাভ করলে, সোনার মুদ্রা নির্মান বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৩২ সালের পর থেকে রূপোর মুদ্রা নির্মানও বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালের পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় তামার মুদ্রা নির্মানও। সেই থেকে সারা পৃথিবীতে মুদ্রা প্রধানতঃ এলুমিনিয়ম, ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল আর জিঙ্কের তৈরী হতে থাকে। এদেশে ৬-৮-১৮৬১ তারিখে প্রথম কাগজের নোট চালু হয়েছিল। তবে মুদ্রা হিসাবে কাগজের নোটের ব্যবহার আগে খুব কম ছিল, সেটা ক্রমশঃ বেড়ে গিয়েছে সারা পৃথিবীতেই। সাধারন কাগজের জায়গায় এসেছে আরো উন্নত মানের কাগজ, এসেছে রাসায়নিক দিয়ে তৈরী কাগজের মতো নোট। তবে বেশ কিছু উন্নত দেশে ধাতব মুদ্রা সম্পূর্ন উঠে গিয়েছে। সেখানে মুদ্রা হিসাবে নোটই ব্যবহার হয়ে থাকে।
ভারতীয় উপমহাদেশে টাঁকশালে প্রথম মুদ্রা নির্মিত হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ নাগাদ মগধের রাজত্বকালে। গুপ্তযুগের মুদ্রা বেশ উন্নত মানের ছিল। আলেকজান্ডার উত্তর-পশ্চিম ভারতে অনেক টাঁকশাল তৈরী করেছিলেন। সুলতান শাসনেও টাঁকশালের নির্মান হয়েছিল। কিন্তু সুন্দর, আধুনিক, নান্দনিক মুদ্রা প্রথম তৈরী হয়েছিল মোঘল আমলে। বিশেষ করে সম্রাট আকবর সারা দেশে ৪২ টি নতুন ও আধুনিক টাঁকশালের জন্ম দিয়েছিলেন। এগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার চকবাজারের টাঁকশালটি। ঢাকার টাঁকশালে ২১ টি বিভাগ ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু, ঢাকা ছাড়া মোঘল আমলে বাংলার যশোহরে একটি টাঁকশালের কথা শোনা গেলেও তার কোন প্রমান মেলেনি। তবে বাংলার আর কোথাও টাঁকশাল ছিল বলে জানা যায় না। আরেকটি অবাক করা বিষয় হল, মোঘল আমলে ধাতুর মুদ্রা থাকলেও বঙ্গদেশে মুদ্রা হিসাবে কড়ির প্রচলনও ছিল। সারা দেশে ছোট ছোট রাজারা টাঁকশাল তৈরী করে মুদ্রা বানাতে থাকে। কোচবিহারের রাজাও করেছিলেন এমন টাঁকশাল। মুর্শিদাবাদেও জন্ম হয় টাঁকশালের। এই ধরনের বিশৃঙ্খল আর্থিক অবস্থার অবসান ঘটেছিল এদেশে ব্রিটিশদের আগমনের পর। তারা মোঘল সম্রাটের কাছে টাঁকশাল বানানোর অনুমতি চেয়েছিলেন। অনুমতি না পেয়ে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৭৫৬ সালে মুর্শিদাবাদের টাঁকশালে সপ্তাহে তিনদিন মুদ্রা বানানোর অনুমতি পায়। ১৭৫৭ সালে সিরাজ উদ দৌলার পতনের পরে ১৭৬০ সালে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়ম দূর্গে টাঁকশাল গড়ার অনুমতি পায় তারা। কিন্তু যে কোনও কারনেই হোক ব্রিটিশেরা কিন্তু টাঁকশাল গড়েনি। বরং ১৭৬২ সালে জন প্রিন্সেপ নামক এক ইংরেজ ফলতাতে একটি কারখানায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর নামে মুদ্রা বানাতে থাকেন। ১৭৮৪ সালে জন প্রিন্সেপ ফলতা থেকে ইংলন্ডে ফিরে গেলে কোম্পানী তখন কলকাতায় টাঁকশাল বসানোর কাজ শুরু করেন। ১৭৯৭ সালে কোম্পানী এক আদেশবলে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সব টাঁকশাল তুলে দেয়। কলকাতায় ১৮২৯ সাল পর্যন্ত কিরন শংকর রায় রোডে তাদের তৈরী নতুন টাঁকশালটি চালু ছিল। এরপরে ইংলন্ড থেকে আধুনিক যন্ত্র এনে ষ্ট্যান্ড রোডে নতুন করে টাঁকশাল চালু হল। সেই সময় সারা ভারতের মধ্যে কলকাতা ও বোম্বের দুটি টাঁকশাল ছাড়া সব টাঁকশাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপরে ১৯৪১ সালে কলকাতায় আলিপুরে আবার নতুন করে টাঁকশালের নির্মান কাজ শুরু হয়। কিন্তু টাঁকশাল তৈরীর কাজ শেষ হতে হতে দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। সেই আলিপুরের টাঁকশালের যাত্রা কিন্তু আজো বন্ধ হয়নি।
এপ্রসঙ্গে পাঠকদের জানা দরকার, ভারত-পাকিস্থান ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হলেও ১৯৫০ সাল পর্যন্ত টাঁকশালে যেসব মুদ্রা তৈরী হত, সেগুলিতে ব্রিটিশ রাজার ছাপ থাকতো। আস্তে আস্তে ভারত ও পাকিস্থানে (পূর্ব পাকিস্থানে) নতুন দেশীয় মুদ্রা তৈরী হতে থাকে। ঢাকাতে আবার টাঁকশাল চালু হয়। পাই পয়সা, আধ পয়সা, এক আনি, দু আনি তৈরী ও প্রচলন আস্তে আস্তে লোপ পেয়ে যায়। চালু হয় নয়া পয়সা। যা পরিবর্তিত হতে হতে চলছে এখনো।
তবে, অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে, টাঁকশালে শুধু মুদ্রা তৈরীই হয় না। সরকারের নানাবিধ গোপনীয় বস্তুসামগ্রী, ষ্ট্যাম্প, বিভিন্ন পদক, প্রতিরক্ষার গোপনীয় স্মারক ইত্যাদি সেখানে তৈরী হয়। টাঁকশালের কর্মীদের গোপনীয়তা রক্ষার বিশেষ প্রশিক্ষন নিতে হয়। তাদের টাঁকশালের গোপন কথা ও পদ্ধতি বাইরে বলা বারন। তাই টাঁকশালের বহু অজানা বিষয় প্রকাশ্যে আসে না। টাঁকশালের পূর্নাঙ্গ প্রামান্য ইতিহাস তাই পাওয়াও খুব কঠিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন