মঙ্গলবার, নভেম্বর ০৫, ২০১৩

কিছুতেই হবার নয়


                লিখেছেন :মনোবর
এক দম্পতি মিলিতভাবে জীবনের বেশ কতকগুলি বছর কাটাবার পর এক সমস্যা দেখা দিল। লোকনাথ বাবুর একবাজে অভ্যাস নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত হল। সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই তিনি গুড়ুম, গাড়ুম, কোঁ কা, কুক, ফস্‌ ফো, ফুক প্রভৃতি নানারকম শব্দ নির্গত করতে থাকতেন। পায়ুদেশ থেকে নির্গত হয়ে কিছু অতিরিক্ত বায়ু পরিবেশকে বিসদৃশ করে তার অতীব সংযমী এবং লজ্জাশীলা স্ত্রীর বিরক্তি উৎপাদন করত। একদিন ক্রুদ্ধ হয়ে স্ত্রী বলে ফেললেন, ‘তোমার অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ সেবন করা উচিত।
ঘোৎ করে বিরক্তি প্রকাশ করে লোকনাথ বাবু বললেন, ‘মুর্খ নারী, প্রকৃতিকে তার নিজের পথে চলতে দাও। স্ত্রী বেচারী কি আর করে। কিন্তু কিছুদিন পরে আবার বাদানুবাদ শুরু হল। স্ত্রী বললেন, ‘ তোমার যা নির্গমন বেগ ভয় হয় কবে না তোমার নাড়ি ভুঁড়ি প্যান্টে নির্গত হয়ে যায়’! উত্তরে লোকনাথ অট্টহাসির সঙ্গে আবার একটি বিস্ফোরণ সম্পন্ন করায় বেচারী স্ত্রী কক্ষত্যাগ পূর্বক নিস্কৃতি লাভে প্রয়াস নিল। দিন যায় দিন আসে। একদিন রাত্রিকালে লোকনাথ হুকুম করে যে মুরগী দুটি চিলেকোঠায় রজ্জুবদ্ধ করা হয়েছে আগামীপ্রাতে তাদের নিধন করে যেন রান্না করা হয়। এবং অতঃপর তার নিদ্রাভঙ্গ করে ভোজনের আহ্বান করা হয়। পরদিন প্রাতঃকালে স্ত্রী একটি দুঃসাহসিক কাজ করে বসে। মুরগীর নাড়িভুঁড়ি গুলি জড় করে সেগুলি একটি পাত্রে নিয়ে সে উপরে যায়। লোকনাথ গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত দেখে সে ঢিলা হাফপ্যান্টের মধ্যে নাড়িভুঁড়িগুলি সমাবিষ্ট করে দ্রুত গতিতে রন্ধনশালায় ফিরে এসে চাপা হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। লোকনাথের প্রতিক্রিয়া শোনবার অপেক্ষায় সে উৎকর্ণ হয়ে অপেক্ষা করে। কিছু পরে সেই মুহূর্ত আসে। উপর থেকে একটি তীব্র আর্তনাদ ভেসে আসে। কিন্তু আর কিছুই ঘটেনা। অতঃপর স্ত্রী কৌতুহলী হয়ে উপরে গমন করে এবং দেখে লোকনাথ প্রসন্নমনে বাথরুম থেকে নির্গত হচ্ছে। তুমি চেঁচালে কেন? স্ত্রী জানতে চায়। গম্ভীর লোকনাথ বলে, তোমার আশংকা সত্য হয়েছে, নাড়িভুঁড়িগুলি নির্গত হয়েছে! ওমা! সেকি! স্ত্রী বিস্মিত হবার ভান করে। আজ তার দিন। জয়ের আনন্দে সে ফেটে পড়তে গিয়েও নিজেকে সংবরন করে। ভয়ের কিছু নেই! যেখান থেকে বেরিয়েছিল সব সেখানেই সেট করে দিয়েছি।জিনিসগুলি ফিরে পেয়ে বেশ স্বস্তি অনুভব করছি এখন। এই বলে লোকনাথ তৃপ্তির হাসি হাসে।

কোন মন্তব্য নেই: