শুক্রবার, নভেম্বর ১৫, ২০১৩

একদিন রাত্রে

                                               লিখেছেন : মনোবর
বারটা আটত্রিশ। কারো কিছু দরকার থাকলে বলো আজ দিয়েই দেবো। আর যদি কিছুই না চাও, তবে উপরে তাকাও। দেখতে পাচ্ছ ? কোথাও কোন শেষ নেই। যতদুরই যাও, যতদ্রুতই যাও শেষ নেই। অনন্ত নক্ষত্র পথ, অসীম শূন্যের তেপান্তরে চুপচাপ পড়ে আছে। কেন এত আয়োজন? কেন এত বিশালতা ? জানো কি এর উত্তর?      কেউ জানেনা। কতদূরই বা জানবে! তার পর আরো আছে! তাহলে বলো এত ভাবার কি আছে? তুমি তো কখনও সবটা জানতে পারবে না। কেননা তোমার ক্ষিধে পায়, ঘুম পায়, তোমার অবসাদ আসে, হতাশা আসে, তোমার অসুখ করে, তুমি অল্পদিন পরেই কবর বা খবর হয়ে পরবর্তী খবরের তলায় চাপা পড়ে হারিয়ে যাও। যা তোমার তা তখন আর একজনের হয়। এইসব কথা বৃক্ষরা জানে,পর্বত এবং সমুদ্র জানে। ওরা তাই চুপচাপ থাকে। আমরা কি সত্যি বৃক্ষ এবং পর্বতকে জানি? তাহলে তো আমাদের বৃক্ষ বা পর্বত হতে হবে।
তুমি কি আমাকে জানো? বা আমি তোমাকে? না। কেউ কাউকে জানেনা। সত্য হল কেবল নিজেকেই জানা যায়। প্রত্যেক মানুষ যে দুনিয়াকে জানে সেটা তারই। তাহলে বাবা, তুমি কটমট করে তাকাচ্ছো কেন? তোমার তো তিনটে মাত্র শন্দ পুঁজি। ভালো, মন্দ আর মোটামুটি। তুমি আমাকে কোনটা বলবে? তোমার করার আছে দুটো। বিশ্বাস বা অবিশ্বাস। মাত্র দুটো। হাসি কি পায়না ? তোমার আবার ভালবাসা নামের একটা সিন্দুক আছে। তাতে নাকি সাতরাজার মণি-মানিক্য সব পালিশ করে রাখা আছে! সেটা আবার সিন্দুকে ঢুকিয়ে চাবি আঁটা। সেটা তুমি একজনকে দেবে। মানে উপযুক্ত, ভাল, সুন্দর, যে উচ্চমানের সুদসহ আবার রত্নগুলো তোমায় রিটার্ণ করতে সক্ষম তেমন কাউকে। কারণ বাঁদরের গলায় তো আর মুক্তোর মালা দেওয়া যায়না। বল, হাসি কি পায়না? ভিখারী কি কখনও দান করতে পারে? যে স্বাধীন নয় সে কি কখনও ভালবাসতে পারে? তুমি চাও কিন্তু দেবে কে? জ্ঞান তো প্রেম দিতে পারবে না। জ্ঞানের কাজ অসংখ্য দুর্বোধ্য শব্দ সৃষ্টি করে অশান্তির হালুয়া করা। তুমি কি দু চামচ হালুয়া খাবে? খাও না বাবা! সবাই তো খাচ্ছে।
তুমি জান কেন রাত হয়। পৃথিবী ঘুরছে তাই হয়। পৃথিবী ঘোরে কেন? টানে ঘোরে? টানটা আছে কেন? না, ঐরকম থাকে বলে জানা গেছে। জেনে তোমার লাভটা কি হয়েছে? নিজের বারটা বাজানো ছাড়া! মহাশূন্যে পিকনিক করতে যাচ্ছো আর আবর্জনা বাড়াচ্ছো। পৃথিবীকে ধ্বংসের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছো। মানে নিজের কবর নিজে খুঁড়েছো। বয়ে যাবে যদি তুমি আর তোমার পৃথিবী ভোগে যায়। যে এই টানটা রেখেছে তার কি আসে যায় তাতে? টানকি ঘুমায়? না তার পেটখারাপ করে? তার স্ট্রোকও হয়না, ডায়াবেটিসও হয়না। তাহলেই বোঝো সেটা কি বস্তু! তার কি তোমার কান্ড দেখে হাসি পায়না?

আমি কার সঙ্গে কথা বলছি বলতো? ঐ টানের সঙ্গে। মাঝে মাঝে এইরকম কথা বলতে হয়। সে ঘুমায় না। গভীর রাত্রে তার সঙ্গে একটু আলাপ করতে হয়। আর তাতে তোমার মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়। তুমি বলে বেড়াও মাতাল হয়ে ঐ করছে। একদিন নিজে মাতাল হও না দেখি তুমি কি করো! সুরাপান করিনা আমি সুরা খাই জয় কালী বলে। কালী কে জানো? ঐ টান। যদি কিছু মনে না করো এবার আমি কি এখানে একটু টান-টান হতে পারি? আহা! মানুষের উপর কত ভালোবাসা তোমার! দেখলেও ঘুম পায়!

কোন মন্তব্য নেই: