বিন্তুর আজ খুব আনন্দ রাজাকে পেয়ে। রাজা বয়েসে এক বছরের বড় হলেও প্রায় সমবয়েসি তো। মাঝে মাঝে গলা জড়িয়ে ধরছে দু’জনে। এইটুকু সময়ে ওদের দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। বিন্তুর বাবা অরুণেশ - অরুণেশের অফিস কলিগ প্রেমাংশু। এই প্রেমাংশুর ছেলেই রাজা। অরুণেশ অনেকদিন ধরে একটা ফ্লাট কিনবার জন্য সবাইকে বলে রেখেছে। গত পরশু প্রেমাংশুই খবর দেয় ওদের তিন তলায় ডান দিকের ফ্লাটটা বিক্রি আছে। তাই সস্ত্রিক অরুণেশকে দ্বিপ্রহরে আহারের নিমন্ত্রণ করে প্রেমাংশু, ফ্লাট-টাও দেখা হবে আর সাথে জমিয়ে আড্ডাও হবে।
আজ সকালে অরুণেশ শ্রীতমা আর ছেলেকে নিয়ে তাই প্রেমাংশুর বাড়িতে। ফ্লাটটও মোটামুটি পছন্দ হল অরুণেশদের, এমনিতে সব ঠিকই আছে। দক্ষিণের দিকে যে ছোটো স্টোররুমটা আছে ওটার অত দরকার নেই তাই অর্ধেকটা ভেঙে দক্ষিণমুখো ছোটো একটা ব্যালকনি বানাতে হবে প্লান করে নেয় অরুণেশ। ড্রইয়িংরুমটা বেশ বড়ই, আড্ডা দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
সেই কবে নিজের বাড়ি থেকে জেদ করে বেরিয়ে এসে এখন ভাড়া বাড়িতে আরুণেশ। বাড়িতে দাদার ফ্যামিলি আছে। বিন্তু হওয়ার পর কি এক আঘোষিত কারণে দাদা বৌদির সাথে অরুণেশ এর মন কষাকষি হয়, তারপরই এই সিদ্ধান্ত।
প্রমোটারের সাথে রেজিস্স্ট্রি আর টাকার ব্যাপারে কথা হল, মোটামুটি এক মাসের মধ্যে পজেশান পেয়ে যাবে, এইরকমই আশা দিল প্রমোটার।
অরুণেশ বিন্তুকে বলে – আর এক মাস পর আমরা এই ফ্লাটে উঠে আসব। রাজাকে তুমি নিজের দাদা-ই ভেবো। ঝগড়া করবে না কিন্তু কোনোদিন, ভালোভাবে থাকবে। এক সঙ্গে স্কুলে যাবে, খেলবে.........
ছোট্ট বিন্তু অরুণেশকে বলে – বাবা একটা কথা বলব – তুমি যে বললে রাজা দাদা আমার নিজের দাদা, আচ্ছা এর আগে যে তুমি বলেছিলে আমার এক জেঠু আছে, তারও নাকি ছেলে আছে, সে তাহলে আমার কি রকম দাদা হবে ?
প্রশ্নটা অরুণেশের খুব কঠিন লাগে, ভাবতে থাকে উত্তরটা......
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন